ভারতের কাঁচাবাজারে দ্রব্যমূল্য ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিদিনের রান্নায় যেসব পণ্য প্রয়োজন হয়, সেগুলোর ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছে। বাজারের খরচ বাড়তে থাকায় কেনার পরিমাণ কমাতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। দিল্লি–কলকাতার প্রতিটি বাজারের চিত্র একই।
আলু ছাড়া বাঙালির হেঁশেল যেন অসম্পূর্ণ! তবে আলুর ঊর্ধ্বমুখী দাম এই চিরচেনা রূপ পাল্টে দিচ্ছে। দিল্লিতে কয়েক দিন আগেও যে মানের আলুর দাম ছিল প্রতি কেজি ৪০ রুপি, সেগুলো এখন ৬০–৭০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। কলকাতায় প্রতি কেজি জ্যোতি আলু ৩৫ রুপি এবং চন্দ্রমুখী আলু ৪০ রুপি।
কলকাতার আলু ব্যবসায়ী সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে দেশটির হিমাগারগুলোতে ৬৩ লাখ টনের মতো আলু ছিল। এখন সেখান থেকে ২৫ রুপি কেজিতে আলু বিক্রি হচ্ছে। সে অনুযায়ী, বাজারে ৩০ রুপি কেজিতে আলু পাওয়ার কথা, কিন্তু এত বেশি দামে কেন বিক্রি হচ্ছে সেটা তাঁদেরও অজানা!
পেঁয়াজ-রসুনের বাজারেও আগুন। ক্রেতারা আগে এক কেজি পেঁয়াজ কিনলেও এখন কিনছেন ৩০০ গ্রাম বা তারও কম। দিল্লিতে পেঁয়াজের দাম ১০০ ছুঁয়েছে। সাধারণ মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯২ থেকে ১০০ রুপি কেজি দরে। আর একটু ভালো মানের পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০৯ রুপি। অন্যদিকে কলকাতায় পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ রুপি।
বিক্রেতারা বলছেন, সেপ্টেম্বরে বৃষ্টির কারণে মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে পেঁয়াজ কম আসছে। তারই প্রভাব পড়েছে বাজারে। এ ছাড়া পেঁয়াজের আমদানিও কমে গেছে।
রসুনের দামও অস্বাভাবিক বেড়েছে। দিল্লিতে রসুনের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ রুপি এবং কলকাতায় সাড়ে ৪০০ রুপি কেজি। বিক্রেতারা বলছেন, রসুনের উৎপাদন কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ফলে দাম বেড়ে চলেছে। আদার বাড়তি মূল্যের ক্ষেত্রেও একই কারণ বলছেন বিক্রেতারা। তবে বাজারে নতুন আদা আসতে শুরু হওয়ায় দাম কমছে।
ভারতে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রায়শই রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে নামতে দেখা গেলেও এখনো তাদের কোনো কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে না। কংগ্রেস মহারাষ্ট্র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা অন্য দলগুলোও নিষ্ক্রিয়। এ অবস্থায় মূল্য নিয়ন্ত্রণের টাস্ক ফোর্সগুলোও কতটুকু কাজ করছে তা নিয়ে প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।