নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ডলারের দর নির্ধারণে ক্রলিং পেগ বা নিয়ন্ত্রিত বাজারভিত্তিক ব্যবস্থা চালুর ঘোষণা দিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি রাজস্ব খাতের সংস্কারেও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশ মেনে। এসব সুপারিশে কাজ হচ্ছে কি না বা কাজের অগ্রগতি কতটুকু, তা দেখতে আসছে আইএমএফের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স (টিএ) কমিটি।
এই কমিটির সদস্যরা আজ রোববার (৩ মার্চ) ঢাকায় আসছেন। এই দলে থাকছেন কমিটির রাজস্ব বিশেষজ্ঞ ডেভিড রবার্ট ওয়েন্টওয়ার্থ, অরবিন্দ মোদি ও ডেভিড উইলিয়াম বার। ২০২২ সালের জুলাইয়ে আইএমএফের কাছে ঋণ চায় বাংলাদেশ। ছয় মাস পর ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি সংস্থাটি শর্তসাপেক্ষে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শর্তের মধ্যে অন্যতম দেশের রাজস্ব খাতের সংস্কার।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকায় আসার আগেই আইএমএফের টিএ কমিটি প্রয়োজনীয় সংস্কারসংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে। এসব কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কমিটির সদস্যরা ৪ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তাঁরা তাঁদের পর্যবেক্ষণ এবং সুনির্দিষ্ট বিষয়ে সুপারিশ উপস্থাপন করবেন। সফরকালে প্রতিনিধিরা অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আইএমএফের কারিগরি কমিটি ডলারের সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান পদ্ধতি এবং মুদ্রানীতিতে ঘোষিত ক্রলিং পেগ পদ্ধতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবে। পাশাপাশি ব্যাংক খাতের খেলাপি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার অগ্রগতি নিয়েও পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরবে আইএমএফ এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল।
ডলারের সংকটে পড়ে ক্রলিং পেগ চালু করা বিভিন্ন দেশের বিষয় আলোচনায় আসতে পারে। তবে ডলারের দর জোর করে আটকে রাখার বিষয়টিকে আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে। আবার ক্রলিং পেগ বাস্তবায়ন করলে অর্থনৈতিক সংকট উসকে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখ্য কাজের মধ্যে আছে সুদের হার এবং এক্সচেঞ্জ রেটের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার কথা বলা হয়েছে। এই ক্রলিং পেগ বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত কারিগরি সহায়তা দিতে আইএমএফের বিশেষ একটি দল আসছে। ব্যাংক ও রাজস্ব খাতের সংস্কার নিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পারে তারা।’