কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
চীন বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়াবে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আজ মঙ্গলবার বেইজিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান।
বেইজিং থেকে ঢাকায় পাঠানো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ৮ আগস্ট পররাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তৌহিদ হোসেনের প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।
উপদেষ্টা বাংলাদেশকে দেওয়া চীনের সব ধরনের ঋণের সুদ দুই–তিন শতাংশ থেকে এক শতাংশে কমানো, ঋণের অঙ্গীকার ফি পুরোপুরি বাদ দেওয়া ও ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ২০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করার জন্য অনুরোধ জানান।
ওয়াং ই বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের ধারাবাহিকতার প্রশংসা করেন। তিনি ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে চীনের নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা উপদেষ্টা জানান। সুদ কমানোর বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে, এমন আশ্বাস দেন ওয়াং ই।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) গণমাধ্যমকে জানায়, চলমান চীনা ঋণের সুদের হার এক শতাংশে নামিয়ে আনতে ও ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ বছর করতে চীনকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বেইজিংকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠিও দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে চীনা ঋণের সুদের হার দুই থেকে তিন শতাংশ এবং পরিশোধের সময়সীমা ২০ বছর।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটার পর আরও তিন বছর চীনে বাংলাদেশের পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশের সুযোগ থাকবে, এমন নিশ্চয়তা দেন দেশটির মন্ত্রী।
বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসার জন্য চীনের কুনমিংয়ে তিন থেকে চারটি সরকারি হাসপাতাল নির্দিষ্ট করে দেওয়ার বিষয়ে দেশটির সরকারের সিদ্ধান্তের কথা উপদেষ্টাকে জানান ওয়াং ই।
ওয়াং ই বলেন, চীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এখানকার স্থিতিশীলতা, সংস্কার, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও উন্নয়ন উদ্যোগকে তাঁর দেশ সমর্থন করে।
চীনের তিব্বত অঞ্চলের নদী ইয়ার্লুং সাংপো যেটি ভারতে ব্রহ্মপুত্র ও বাংলাদেশ যমুনা নামে প্রবাহিত হচ্ছে, তার জলপ্রবাহের তথ্য–উপাত্ত বিনিময়ে আগে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল। এই স্মারকটি বাস্তবায়নের একটি পরিকল্পনা আজ বৈঠকের পর উভয় পক্ষ সই করে।
চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম, বাণিজ্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন।
উপদেষ্টার চীন সফর আগামী ২৪ জানুয়ারি শেষ হবে।