হোম > অর্থনীতি

এলডিসি থেকে উত্তরণের উড়োজাহাজ এখন আকাশে, ল্যান্ডিংয়ের সুযোগ নেই: আনিসুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আজ মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থনীতিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

নানান সমস্যা থাকলেও ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থনীতিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, এলডিসির উড়োজাহাজ এখন আকাশে উড়ছে। ইমারজেন্সি ল্যান্ডিংয়ের সুযোগ নেই।

আজ মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এদিন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এলডিসি বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বৈঠক হয়। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ; পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন; শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার; প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী; বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী; বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ।

বৈঠকে এলডিসি থেকে উত্তরণের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোন কোন বিষয়ে আমরা শক্ত অবস্থানে আছি এবং কোন কোন বিষয়ে আরও শক্ত হতে হবে, তা চিহ্নিত করেছি। পর্যালোচনায় আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের প্লেন চলবে, ক্রাশ করার কোনো সম্ভাবনা তেমন নেই।’

এলডিসি থেকে উত্তরণের পরে যাতে দেশের কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, সেখানে আমাদের কর্মসংস্থান ও বেসরকারি খাতের ওপর চাপ আসতে পারে। তা মোকাবিলায় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের নীতিমালায় সম্ভাব্য দুর্যোগ কী হতে পারে, তা তালিকাভুক্ত করেছি। সেইভাবে প্রস্তুতি থাকবে। একটি উচ্চপর্যায়ে কমিটি হচ্ছে, যারা সার্বক্ষণিক এটাকে তদারক করবে। পর্যবেক্ষক কমিটিতে সরকারি কর্মচারীর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ, বেসরকারি খাত এবং সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন খাত থেকে লোক নেব।

বাংলাদেশ থেকে দুর্বল অর্থনীতির দেশ এলডিসি উত্তরণ করেছে দাবি করে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘সম্প্রতি ভুটান এলডিসি উত্তরণ করেছে। ওরা পারলে আমরা পারব না কেন? সেই আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়া এলডিসি উত্তরণ করেছে। তাই আমাদের উত্তরণ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’

এলডিসি উত্তরণ থেকে পেছানোর দাবি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘এটা অবান্তর। আমরা এখন যে ডিউটি ফ্রি এক্সেস ২০২৬ সালে বন্ধ হয়ে যাবে না। আমাদের এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২০২৯ সাল পর্যন্ত প্রস্তাব দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য, চীন আমাদের চলমান সুযোগ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে। ব্যবসায়ীদের চিন্তা এরই মধ্যে কাটিয়ে উঠেছি। এটা দৃষ্টিভঙ্গি ও বোঝার অভাব।’

সম্ভাব্য দুর্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা আছে। আমাদের বাণিজ্যের জন্য আলাদা কোনো সংস্থা নেই। এটার জন্য এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডেডিকেটেড একটা সেল থাকবে, যারা শুধু ট্রেডের বিষয়ে কাজ করবে। তারা বদলি হবে না। আমরা শক্ত একটা ট্রেড নেগোশিয়েটিং বডি রেডি করব। সন্দেহের জায়গায় কাজ শুরু করে দিয়েছি।’

এলডিসি উত্তরণ হলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প কোনো ক্ষতির শিকার হবে না বলে মনে করেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এলডিসি উত্তরণ করলে বাংলাদেশ ‍কী সুবিধা পাবে এমন প্রশ্নে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আপনি সুবিধা পাওয়ার জন্য করবেন কেন? সুবিধা সৃষ্টি করে নেবেন। ভিক্ষার মানসিকতা থাকবে কেন? এটা তো আমাদের কলোনিয়াল হ্যাংওভার। আমরা সুবিধা তৈরি করে নেব। বিনিয়োগ সম্মেলন করলাম। প্রধান উপদেষ্টা এরই মধ্যে বলেছেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক হাব হবে। আমি যদি সব সময় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরি, তাহলে কীভাবে অর্থনৈতিক হাব হবে বাংলাদেশ।’

বাংলাদেশের প্রধান চ্যালেঞ্জ সুশাসন বলে জানান আনিসুজ্জামান চৌধুরী। দুর্নীতি বন্ধে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে; একই সঙ্গে ব্যবসার সুবিধার জন্য সরকারের নানান কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বলেছেন, কম সংস্কার হলে ডিসেম্বরে নির্বাচন বেশি হলে আগামী বছরের জুনে নির্বাচন, কম এবং বেশি সংস্কারের প্যারামিটার সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘পুরো বিষয়টি নির্ভর করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলা রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের ওপর। দলগুলো যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবে, সেটার ওপর নির্ভর করবে আমরা কতটুকু সংস্কার করতে যাচ্ছি।’

পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক সরকার কীভাবে দেখছে, এটা কি প্রো-পাকিস্তানি কূটনীতি, নাকি স্বাভাবিক কূটনীতি এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার ফরেন পলিসি হচ্ছে সার্ক পুনরুজ্জীবিত করা এবং সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন। পাকিস্তান সার্কভুক্ত দেশ, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন চাচ্ছি। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন চাচ্ছি। ভুটান ও নেপালের সঙ্গেও চাচ্ছি। গত সপ্তাহে সিদ্ধান্ত এসেছে, আমরা নেপালের জন্য একটা অর্থনৈতিক অঞ্চল করব। এটার জন্য উত্তরবঙ্গে জমি দেখছি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে আলোচনা হবে। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে প্রো-বাংলাদেশ। কূটনীতিতে বাংলাদেশের স্বার্থ যতটুকু অক্ষুণ্ন রাখা যায়, তা করছি। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিবিড়ভাবে কাজ করছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিল নগদ

ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করল ডিএসই

ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল নজরদারি করবে এনবিআর

ওয়ালটনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

রেমিট্যান্স সংগ্রহে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন জনতা ব্যাংকের

রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক

২০ কোটি টাকার বেশি সব ঋণ ফের যাচাই করা হবে: গভর্নর

একীভূত পাঁচ ব্যাংকের নামের সাইনবোর্ড বদলাচ্ছে আজ-কালের মধ্যেই: গভর্নর

সীমাবদ্ধতার মাঝেও সাফল্যের গল্প