নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশের ফার্নিচার শিল্পে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এবং এ শিল্পের বিকাশে অধিক বিনিয়োগ অত্যন্ত জরুরি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
আজ সোমবার (২০ জানুয়ারি) পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের কনফারেন্স হলে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ আয়োজনে ‘বাংলাদেশ ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রি: আনলকিং এক্সপোর্ট পটেনশিয়াল’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ফার্নিচার শিল্পের বৈশ্বিক বাজারে জায়গা করে নিতে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধার সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে। অল্পসংখ্যক প্রতিষ্ঠান নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ লাখ ইউএস ডলার আয় সম্ভব নয়। আমাদের সম্ভাবনা থাকলেও তা কাজে লাগাতে প্রয়োজন বৃহৎ বিনিয়োগ এবং কার্যকর নীতিমালা। বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য অতীতে ভারতকেন্দ্রিক ছিল। এ কারণে রপ্তানি বাজার উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত হয়নি। আমাদের বিশ্ববাজারের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে মানসম্পন্ন ফার্নিচার উৎপাদন বাড়াতে হবে।’
আগের সরকারের ব্যর্থ নীতিমালা এবং দুর্বৃত্তায়নের কঠোর সমালোচনা করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত এবং অন্যান্য শিল্প খাতের সম্ভাবনা নষ্ট করা হয়েছে। এসব খাতে দুর্বৃত্তায়নের বোঝা এখন আমাদের টানতে হচ্ছে। শুধু বন্ড সুবিধার ওপর নির্ভর করে ব্যবসায় টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধ করতে হবে এবং ব্যবসায়ীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে হবে।’
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) প্রসঙ্গে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘সব দেশের সঙ্গে এফটিএ করা কার্যকর সমাধান নয়। ইউরোপের যেসব দেশে আমাদের বাজার প্রবেশাধিকার রয়েছে, তাদের সঙ্গে এফটিএ করলে বরং ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। এফটিএ করতে হবে সেসব দেশের সঙ্গে, যাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যের বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু বন্ড সুবিধা বা এফটিএ নয়, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা টেকসই অগ্রগতি অর্জন করতে পারি। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদের মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন এবং রপ্তানি বাড়াতে হবে।’
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক দেওয়ান আতিফ রশিদ।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু ইউসুফ, বুয়েটের ম্যাটারিয়ালস অ্যান্ড মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ শরীফ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ডিজাইনের ডিন অধ্যাপক ফুয়াদ এইচ মল্লিক, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান খান চৌধুরী এবং হাতিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম এইচ রহমান।