হোম > অর্থনীতি

বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধিতে কৃষিতেও বড় ধাক্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের কৃষক ও তাঁদের পরিবার বিদেশে চলে যাওয়ার কারণে প্রায় ৬ শতাংশ কৃষিজমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে, যা কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই পরিবর্তনের ফলে কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ ৩.৪৫ শতাংশ বেড়েছে, যা কৃষকের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার একটি হোটেলে চার দিনব্যাপী বিআইডিএসের বার্ষিক সম্মেলনের শেষ দিনে আয়োজিত ‘বিআইডিএস ওয়ার্কস ভি: ক্রেডিট, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ল্যান্ড ইউজ’ শীর্ষক সেশনে সংস্থার গবেষক নাদিম উদ্দিন প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। এই সেশনে মোট চারটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। যেখানে কৃষি খাতের বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ এবং উন্নয়ন সম্ভাবনার ওপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে কৃষি খাতের জন্য প্রস্তাবিত নীতিগত ও কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো নিয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। সেশনে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক কাজী সালাউদ্দিন।

শেষ দিনের দুপুরের সেশনে ‘ইমপেক্ট ইন্টারন্যাশনাল মাইগ্রেশন অন দি ইউজ অব অ্যাগ্রিকালচার ল্যান্ড: এভিডেন্স ফ্রম বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বিআইডিএসের গবেষক নাদিম উদ্দিন বলেন, কৃষকের পরিবার থেকে বিদেশে মাইগ্রেশন করার ফলে দেশের কৃষিজমি অনাবাদি হওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১১ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে প্রায় ৬.৩৩ শতাংশ কৃষিজমি অনাবাদি রয়েছে। এ ছাড়া যারা আন্তর্জাতিক মাইগ্রেশন করছে, তাদের পরিবারের হাতে ২.৩ শতাংশ জমি অনাবাদি অবস্থায় রয়েছে, যা মোট কৃষিজমির ১২.৪৬ শতাংশের সমপরিমাণ।

গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

নাদিম উদ্দিন বলেন, মাইগ্রেশন হওয়া পরিবারের সদস্যরা আর তাঁদের পুরো জমিতে কৃষিকাজ করেন না। বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থে তাঁরা পণ্য কিনে খাচ্ছেন, কিন্তু ফসল ফলাচ্ছেন না। এসব জমি মূলত দেশের গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত। প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রামাঞ্চলে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি কৃষিজমিতে চাষাবাদ করেন। বিদেশে যাওয়া পরিবারের মধ্যে নারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে দেশে মোট ৫৯ শতাংশ আবাদযোগ্য জমি রয়েছে।

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট আয়তন ১ কোটি ৪৯ লাখ ২১ হাজার হেক্টর এবং আবাদযোগ্য জমি ৮৮ লাখ ১৭ হাজার ৯৩৫ হেক্টর, যা মোট জমির প্রায় ৫৯ শতাংশ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আগে যেসব জমিতে তিনবার ফসল হতো, সেগুলোতে এখন বছরে দুটি ফসল ফলছে। এর ফলে ১২ শতাংশ জমিতে ফসলের পরিমাণ কমেছে।

উর্বরতা শক্তি কমছে, উৎপাদন খরচ বাড়ছে

একই সেশনে, ‘অ্যাগ্রিকালচার প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণাটি উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের রিসার্চ ফেলো তাজনূর সামিনা খাতুন।

২০১২ থেকে ২০১৮ সালের ডেটা বিশ্লেষণ করে তাজনূর সামিনা খাতুন জানান, এই সময় ধান উৎপাদনের খরচ ৩.৪৫ শতাংশ বেড়েছে। ১৯৯১-২০০০ সাল পর্যন্ত জমির উর্বরতা শক্তি ছিল ২.৭৫ শতাংশ, যা ২০০১-১০ সাল পর্যন্ত বেড়ে ৩.৩০ শতাংশ হয়। তবে ২০১১-২০ সালের মধ্যে উর্বরতা শক্তি কমে ঋণাত্মক (-০.৪৪ %) হয়ে পড়ে, যা ২০১২-২১ সালের মধ্যে আরও কমে শূন্য দশমিক ৩৫ শতাংশে এ নেমে আসে। এর ফলে ধান উৎপাদনের খরচ বাড়ে; ২০১২ সালে প্রতি কেজি চালের উৎপাদন খরচ ছিল ১০ টাকা ৫১ পয়সা, যা ২০১৮ সালে ১২ টাকা ৮৮ পয়সা হয়। এই সময়ে ধানের দাম মাত্র ১.৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১২ সালে ১ কেজি চাল বিক্রি করে কৃষকেরা ১৬ টাকা ১৭ পয়সা লাভ করতেন, যা ২০১৫ সালে ১৬ টাকা ৫২ পয়সা এবং ২০১৮ সালে ১৭ টাকা ৪৮ পয়সা হয়। তবে গড় লাভ ১.৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও উৎপাদন খরচ ৩.৪৫ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে কৃষকেরা তাঁদের বিনিয়োগে কম রিটার্ন পাচ্ছেন, কারণ উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়লেও খরচ দ্রুত বেড়ে গেছে, যা তাঁদের লাভ কমিয়ে একটি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।

রিসার্চ ডিরেক্টর মোহাম্মদ ইউনুস ‘অ্যাগ্রিকালচারাল ক্রেডিট, ট্রেনিং অ্যান্ড ফার্ম হাউসহোল্ড ওয়েলফেয়ার ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় দেখিয়েছেন, রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চলের ২৬ জেলার কৃষকেরা, যাঁরা ধান চাষ না করে শাকসবজি বা অন্য ফসল উৎপাদন করেছেন, তাঁরা ধান চাষ করা কৃষকদের তুলনায় বছরে ১৪ হাজার ৮৮ টাকা বেশি মুনাফা করেছেন। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার ও এডিবির সহায়তায় পরিচালিত হয়েছিল।

সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিল নগদ

ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করল ডিএসই

ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল নজরদারি করবে এনবিআর

ওয়ালটনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

রেমিট্যান্স সংগ্রহে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন জনতা ব্যাংকের

রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক

২০ কোটি টাকার বেশি সব ঋণ ফের যাচাই করা হবে: গভর্নর

একীভূত পাঁচ ব্যাংকের নামের সাইনবোর্ড বদলাচ্ছে আজ-কালের মধ্যেই: গভর্নর

সীমাবদ্ধতার মাঝেও সাফল্যের গল্প