অর্থনৈতিকভাবে নাজুক শ্রীলঙ্কায় চলতি মাসে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ঋণাত্মক ২ দশমিক ১ শতাংশে নেমেছে। এটি ১৯৬১ সালের পর সর্বোচ্চ ঋণাত্মক মূল্যস্ফীতির রেকর্ড। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মূল্যস্ফীতি কোনো দেশ বা অঞ্চলের সামগ্রিক পণ্য বা সেবার দাম বাড়ার প্রবণতা নির্দেশ করে। তবে অর্থনৈতিক সংকোচনের কারণে এর উল্টো ঘটনা ঘটে, যা ঋণাত্মক মূল্যস্ফীতি হিসেবে পরিচিত।
যেমন বাংলাদেশে গত অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ হয়েছে। এর অর্থ হলো— গত বছর অক্টোবরে যে পণ্য বা সেবার মূল্য ছিল ১০০ টাকা, এই অক্টোবরে সেটার দাম বেড়ে হয়েছে ১১০ টাকা ৮৭ পয়সা।
উল্টোদিকে একইভাবে শ্রীলঙ্কার ঋণাত্মক ২ দশমিক ১ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থ হলো— গত বছর নভেম্বরে যে পণ্যের দাম ছিল ১০০ টাকা, এবার সেটার দাম কমে ৯৭ টাকা ৯০ পয়সায় নেমেছে।
২০২২ সালে নজিরবিহীন আর্থিক সংকটে পড়ে শ্রীলঙ্কা। ভোগ্যপণ্যের তীব্র ঘাটতি ও মূল্যস্ফীতি প্রায় ৭০ শতাংশে পৌঁছায়। পরবর্তীতে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের বেইলআউট এবং কর বৃদ্ধি ও কৃচ্ছ্রতামূলক পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশটি অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা শুরু করে।
গত সেপ্টেম্বরেও শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি ঋণাত্মক দশমিক ৫ শতাংশে ছিল, যা অক্টোবরে দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসে। চলতি নভেম্বরে তা ঋণাত্মক ২ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছায়।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের বড় ধরনের দরপতনের কারণে মূল্যস্ফীতি সামনের কয়েক মাসেও ঋণাত্মক থাকতে পারে। তবে এটি শিগগিরই বৃদ্ধি পেয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা ৫ শতাংশে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সেপ্টেম্বরে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিসানায়েকে আইএমএফের বেইলআউট কর্মসূচি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এতে কর বৃদ্ধি ও রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের কাটছাঁট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।