দেশব্যাপী নিরাপত্তার সংকট কিছুটা কাটতে শুরু করেছে। এতে ব্যাংকের তারল্যসংকট কমতে শুরু করেছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে এক দিনে গ্রাহককে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকার বেশি সরবরাহ না করতে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই সপ্তাহে এক দিনে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা তুলতে পারবেন।
ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাঠানো এক জরুরি বার্তায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। একাধিক ব্যাংক থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, একজন গ্রাহক নগদ টাকা উত্তোলন করতে না পারলেও যে কোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করতে পারবেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়, ব্যাংক শাখায় নগদ পরিবহনের নিরাপত্তা সমস্যার কারণে, অনুগ্রহ করে আগামী সপ্তাহে ২ লাখের বেশি নগদ তোলার অনুমতি দেবেন না। পাশাপাশি চেকে লেনদেনের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। একই সঙ্গে যেকোনো সন্দেহজনক লেনদেন বন্ধ করতে ব্যাংকগুলোকে সচেষ্ট হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তথ্য বলছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ কিছুটা বেড়ে যায়। বিশেষ করে আওয়ামীপন্থী রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী পরিবার থেকে নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ দেখা যায়। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার ১ লাখ টাকার বেশি উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদেরা চলমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যাংক থেকে যেন অর্থ সরাতে ও পাচার করতে না পারে, সে জন্য সন্দেহজনক লেনদেন হলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। পরিচিত বা স্বজনপ্রীতি করে ছাড় দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএফআইইউর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বৈঠকে কড়া বার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, দেশে এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতি চলছে। অনেক দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ, সন্ত্রাসী অর্থ সরানো ও পাচারের চেষ্টা করবে। তাই এখন থেকে যেকোনো ধরনের লেনদেনে মানি লন্ডারিংয়ের সব নিয়মনীতি শতভাগ পরিপালন করতে হবে।’
এ দিকে রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, মালিবাগ, শান্তিনগর, পল্টনের সব বুথে টাকা সরবরাহ করা হয়েছে বলে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
এক্সিম ব্যাংকের গ্রাহক রোহান রাজিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেলা ১১টায় শান্তিনগরে ওয়ান ব্যাংকের এটিএমে টাকা তুলেছি। এর আগে তিন দিন টাকা না পেয়ে ফিরে এসেছি।’
সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক নাসরিন সুলতানা বলেন, ‘ব্যাংক থেকে ২ লাখ টাকার বেশি তোলা যাচ্ছে না। তাই অগ্রণীর এটিএমে টাকা তুলেছি।’