হোম > অর্থনীতি

তিন মাসে ব্যাংক খাতে প্রভিশন ঘাটতি বাড়ল ৩০ হাজার কোটি টাকা

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 

বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন ঘাটতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। খেলাপি ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় এই ঘাটতি অস্বাভাবিক বাড়ছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৫ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা, যা জুন শেষে ছিল ২৪ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মানে হলো, মাত্র তিন মাসে ঘাটতি দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া শুধু ৮টি ব্যাংকের ঘাটতিই ৬১ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। তবে কিছু ব্যাংক প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সঞ্চিতি রাখায় সামগ্রিক ঘাটতি কিছুটা কমেছে। এসব তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি ৭ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের ২৫ হাজার ৪১ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের ৫ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা এবং রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি ৪ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি—১৬ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি ৪৪১ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংকের ২৫৯ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকের ৫৭৪ কোটি টাকা এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ঘাটতি ৫৮৮ কোটি টাকা রয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেন, গত ১৫ বছরে ব্যাংকগুলো যথাযথভাবে তদারকি হয়নি, যার ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, লোনগুলোর মিনিমাম ডাউন পেমেন্ট পরিশোধের মাধ্যমে সেগুলোকে যতটা সম্ভব আনক্ল্যাসিফাই এবং রিশিডিউল করতে হবে, যাতে ক্যাশ ফ্লো ঠিক রাখা যায়। প্রভিশন ঘাটতি পূরণের জন্যও এসব রিশিডিউল করা আবশ্যক। এ কারণে বড় গ্রাহকদের বিরুদ্ধে খেলাপি ঋণ আদায়ে আগামী মার্চ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে তারা কাউকেই ছাড় দেবে না এবং সব খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তথ্য অনুযায়ী, প্রভিশন ঘাটতির পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণও বাড়ছে। ঋণ কম দেখানোর জন্য অনেক ব্যাংক বিদ্যমান পরিমাণের বাইরে বিরাট অঙ্কের ঋণ রাইট অফ (অবলোপন) করছে, যা তাদের ব্যালান্সশিটে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না।

ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে সাধারণ ঋণের বিপরীতে শূন্য দশমিক ৫ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রভিশন রাখতে হয়। নিম্নমানের খেলাপি ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ এবং সন্দেহজনক খেলাপি ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ প্রভিশন রাখা বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া মন্দ বা লোকসান ক্যাটাগরির খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রতিটি ব্যাংকের জন্য ১০০ শতাংশ বা শতভাগ প্রভিশন আলাদা করে রাখার নিয়ম রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকগুলো তাদের বিতরণ করা ঋণ আদায় করতে ব্যর্থ হচ্ছে, যার ফলে অতিরিক্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। মন্দ ঋণের পরিমাণও বাড়ছে এবং এসব ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক। আর্থিক সংকট এবং আমানতের প্রবৃদ্ধি কম থাকায় ব্যাংকগুলো যথেষ্ট পরিমাণে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারছে না। এই প্রভিশন ঘাটতি ব্যাংকিং খাতের দুর্বল আর্থিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে, যা মূলত উচ্চ খেলাপি ঋণের ফসল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২১ কোটি টাকা, যার ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ খেলাপি হয়েছে। এই খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা জুনের তুলনায় ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা বেড়েছে। নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে খেলাপি ঋণ রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

দাবির মুখে অটোমোবাইলস খাতের বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

বিনিয়োগ আকর্ষণে এফডিআই হিটম্যাপ

১৮ দিনে এসেছে ১২১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স

ট্রাম্প প্রশাসনে চোখ ব্যবসায়ীদের

ভালো শেয়ার রইল পড়ে, মন্দের দাম শুধুই বাড়ে

বেকারত্ব গোপন করতে ভুয়া অফিস ভাড়া নিচ্ছেন চীনা তরুণেরা

১০ লাখ টন চিনি রপ্তানি করবে ভারত, দাম কমবে বিশ্ববাজারে

চলতি বছরই চীনে পেয়ারা ও কাঁঠাল রপ্তানির অনুমতি মিলবে

‘বাংলাদেশের নেওয়া ঋণের সুদ হার কমানোর কথা বিবেচনা করছে চীন’

আলোক হেলথ কেয়ারের পক্ষ থেকে ‘ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প’ অনুষ্ঠিত

সেকশন