লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে আবার পণ্য পরিবহন কার্যক্রম চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে নিউজিল্যান্ডের শিপিং প্রতিষ্ঠান মায়ের্স্ক। সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের হামলা প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার পর তারা এ সিদ্ধান্ত নিল। খবর বিবিসির।
হুতি বাহিনীর হামলার কারণে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান লোহিত সাগরের পথে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে।
জার্মানির পরিবহন প্রতিষ্ঠান হাপাগ–লয়েড বলছে, তারা এ রুট ব্যবহার করা শুরু করবে কি না তা বুধবার সিদ্ধান্ত নেবে।
জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক তরল গ্যাসসহ (এলএনজি) অন্যান্য পণ্য পরিবহনের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুট হলো লোহিত সাগর। বাব আল–মান্দাব প্রণালি নামে পরিচিত এ পথটির দক্ষিণে রয়েছে ইয়েমেন উপকূল ও উত্তরে সুয়েজ খাল।
হুতিরা ইসরায়েল–হামাস যুদ্ধে হামাসের পক্ষ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েলগামী সব জাহাজেই হামলা করবে বলে হুমকি দিয়েছে ইয়েমেনের এ বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এরই মধ্যে কয়েকটি জাহাজে ড্রোন ও রকেট হামলা চালিয়েছে তারা।
লোহিত সাগরের বিকল্প পথ ব্যবহার করলে কেপ অব গুড হোপ রুটে অতিরিক্ত ৩ হাজার ৫০০ নটিক্যাল মাইল অতিক্রম করতে হয়। এতে সুয়েজ খাল দিয়ে পণ্য পরিবহনে ব্যাঘাত ঘটার এবং পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
পরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলো লোহিত সাগরের পথ এড়িয়ে চলছে—এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর জাহাজগুলোর নিরাপত্তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র অপারেশন প্রসপারিটি গার্ডিয়ান নামের একটি আন্তর্জাতিক নৌ অভিযান শুরু করেছে।
গত রোববার একটি বিবৃতিতে মায়ের্স্ক বলে, এ উদ্যোগ নেওয়ায় তারা লোহিত সাগরের পূর্বমুখী ও পশ্চিমমুখী জাহাজ চলাচল আবারও শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বর্তমানে তারা প্রথম জাহাজের ট্রানজিট তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে এবং যত দ্রুত সম্ভব তা কার্যকর করা হবে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ পরিবহন প্রতিষ্ঠানের মতে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হলেও ওই অঞ্চলের সব ঝুঁকি এখনো পুরোপুরি যায়নি। মায়ের্স্ক পরিস্থিতির পুনর্মূল্যায়ন করতে দ্বিধা করবে না এবং সমুদ্রযাত্রীর নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় মনে হলে আবারও বিকল্প পথ বেছে নেবে তারা।
অন্যান্য পরিবহন প্রতিষ্ঠান মেডিটেরিনিয়ান শিপিং কোম্পানি (এমএসসি), সিএমএ সিজিএম ও হাপাগ–লয়েডও লোহিত সাগরের এ রুটটি এড়িয়ে চলছে।