চলতি মাসের শুরুর দিকেই আন্তর্দেশীয় লেনদেন ব্যবস্থা চালু করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চারটি দেশ। পরে সেই দলে যোগ দেয় ফিলিপাইন। নতুন এই পদ্ধতি অনুসারে এই দেশগুলোর যেকোনো একটি দেশে কিউআর কোড ব্যবহার করে নিজস্ব মুদ্রায় যেকোনো পণ্যের মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। এবার সেই দেশগুলোর সঙ্গে এই ব্যবস্থায় যুক্ত হচ্ছে ভিয়েতনাম। সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএ-এর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এই উদ্যোগ শুরু করা দেশ চারটি হলো—ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর। পরে এই উদ্যোগে ফিলিপাইনও যোগ দেয়। বিশ্লেষকেরা বলছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশগুলোর দ্বারা বাস্তবায়িত নতুন এই লেনদেন ব্যবস্থা দেশগুলোর মধ্যে আর্থিক একীকরণের বিষয়টিকে আরও গভীর করবে। পাশাপাশি আসিয়ান জোটকেও অর্থনৈতিক সংহতির আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে।
উল্লিখিত পাঁচটি দেশের সঙ্গে আজ শুক্রবার ভিয়েতনামের কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সেই চুক্তির আওতায় এখন থেকে ভিয়েতনামও আন্তর্দেশীয় লেনদেন ব্যবস্থার অংশীদার হবে। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় আসিয়ানের ১০টি সদস্য দেশের অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
গত বছর আসিয়ানের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো এ বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। পরে চলতি বছরের মে মাসে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন উল্লিখিত চারটি দেশের সরকারপ্রধানেরা। পরে সেই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো একটি অভিন্ন লেনদেন ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়।
আন্তসীমান্ত এই লেনদেন ব্যবস্থা চালুর মূল উদ্দেশ্য হলো—দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, রেমিট্যান্স এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও সহজ করা এবং আরও বাড়ানো। এ ছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় একটি আর্থিক ইকোসিস্টেম চালু করা। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই লেনদেন ব্যবস্থা বড় আকারে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালুর জন্য হলেও এতে করে খুচরা পর্যায়ের ভোক্তারাও অনেক বেশি উপকৃত হবেন।
আন্তসীমান্ত এই লেনদেন ব্যবস্থাকে অনেক বিশ্লেষক আবার এই অঞ্চলে মার্কিন ডলারসহ অন্যান্য বিদেশি মুদ্রার ওপর এই অঞ্চলের দেশগুলোর নির্ভরশীলতা কমানোর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলেও মনে করছেন। এ বিষয়ে ডিপ্লোম্যাট কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিনের পরামর্শক ও ডিপ্লোম্যাট রিস্ক ইন্টেলিজেন্সের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিশ্লেষক নিকো হান বলেছেন, ‘এর মাধ্যমে এই চারটি দেশ মার্কিন ডলার বা চীনা রেনমিনবিকের (চীনা ইউয়ানকে রেনমিনবিক নামে ডাকা হয়) প্রভাবকে খর্ব করবে।’