হোম > অর্থনীতি

ফলনের আগেই কৃষকের খাতায় শুধু লোকসান

মাহিদুল ইসলাম, কমলগঞ্জ, (মৌলভীবাজার) 

মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরে ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের হাওরাঞ্চলে বোরো মৌসুমের শুরুতেই স্পষ্ট হয়েছে লোকসানের সংকেত। সেচের অভাব, পানির সংকট ও রোগবালাইয়ে ফলন অনেক কম, বিনিয়োগ তুলতে না পারার শঙ্কায় দিশেহারা কৃষকেরা। এনজিও ও স্থানীয় ঋণদাতার কাছ থেকে ধার করা টাকাই এখন চাপ হয়ে ফিরছে। এই ক্ষতি কৃষকপাড়া ছাড়িয়ে প্রভাব ফেলছে স্থানীয় অর্থনীতিতে; ধানের ঘাটতিতে মিলগুলোতে সরবরাহ কম, বাজারে চালের দামে অস্থিরতা আর সামনে বাড়তে পারে সাপ্লাই চেইনের টানাপোড়েন।

মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৬২ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে, যার মধ্যে ৩৭ হাজার ৩১৫ হেক্টরই হাওরাঞ্চলে। কিন্তু হাওরের অনেক জমিতে উৎপাদন অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। যেখানে প্রতি একরে ৫০-৫৫ মণ ধান হওয়ার কথা, সেখানে ফলন হয়েছে মাত্র ২৫-৩০ মণ, কোনো কোনো জমিতে তারও কম।

রাজনগরের কাউয়াদীঘি হাওরের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এক একর জমিতে ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ করে ধান তুলেছি, যার বাজারমূল্য ২০-২৫ হাজার টাকার বেশি না। ঋণ করে আবাদ করেছিলাম, এখন কীভাবে শোধ করব বুঝতে পারছি না।’

এই লোকসান শুধু কৃষকের ঘরে থেমে নেই; এর প্রভাব পড়ছে পুরো কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে। মৌলভীবাজারে মাঠের শ্রমিক, চালকল মালিক, পরিবহনকর্মী ও চাল ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন বিপাকে। ফসল কম হওয়ায় অনেক মিলার ধান কিনতে পারছেন না ঠিকমতো। বাজারে দামের কিছুটা বাড়তি চাপ থাকলেও কৃষক সেভাবে লাভবান হতে পারছেন না, কারণ চিটা ধানের পরিমাণ বেশি হওয়ায় সেই ধান বিক্রি হচ্ছে কম এবং দামও মিলছে না আশানুরূপ।

কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষক আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘আমি দুই একর জমিতে ধান করেছি। কিছু জায়গায় ধান ভালো হলেও পানির অভাবে অনেক জায়গায় ফলন অর্ধেকে নেমে গেছে।’ তাঁর কথায়, উৎপাদন খরচ ঠিক থাকলেও বাজারে কাঙ্ক্ষিত রিটার্ন মিলছে না।

মাঠপর্যায়ের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বোরো চাষে খরচের ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতি গুনতে হচ্ছে। অনেকে ধান বিক্রির টাকা দিয়েই ঋণের দায় শোধের চিন্তায় ছিলেন, কিন্তু উৎপাদন ভেঙে পড়ায় সেই পথ এখন প্রায় বন্ধ। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিছু এলাকায় ঋণ পুনঃ তফসিল বা সহজ শর্তে পুনঃঋণের দাবি উঠতে শুরু করেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘কিছু এলাকায় ফলন ভালো হলেও পানির সংকট ও রোগবালাইয়ের কারণে কিছু এলাকায় ফলন কমেছে। তবে এটা ব্যাপকভাবে নয়। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটার কাজ শেষ হবে।’

কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। মৌসুমি ধানই মৌলভীবাজারের কৃষিপণ্য বাণিজ্যের মূল স্রোত। সেই স্রোতে এবার ঘাটতি এতটাই প্রবল যে তা শুধু কৃষক নয়, পেছনের পুরো সাপ্লাই চেইনকে বাধাগ্রস্ত করছে। এখন মৌসুমি ক্ষতির এই ধাক্কা সামাল দিতে না পারলে হাওরাঞ্চলের অর্থনৈতিক গতিশীলতা দীর্ঘ মেয়াদে দুর্বল হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

সোনার দাম ভরিতে ১৪৭০ টাকা বাড়ল

শেভরনের সহায়তায় সিলেটে ৬০ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনে ফেরা

আরও ১৪ কোটি ১৫ লাখ ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

দিনে ১৭২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিল সরকার

ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল কিনবে সরকার

এখন থেকে মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ করা যাবে নগদে

তৈরি পোশাক রপ্তানি: ইইউ-যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে সম্ভাবনা জাপানে

এসএমই মেলায় ১৬ কোটি টাকার অর্ডার পেলেন উদ্যোক্তারা

আপেল, মাল্টা, কমলাসহ তাজা ফলের শুল্ক কমানোর সুপারিশ

নির্বাচনে ভোটার ও রাজনীতিবিদের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে: দেবপ্রিয়