নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবকে ভোক্তা ও শিল্প খাতের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই অযৌক্তিক কর ও শুল্ক বাতিল না করা হলে উৎপাদন বন্ধসহ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নামবেন।
গতকাল রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সদস্যরা এসব দাবি জানান। পাশাপাশি সরকারকে আগামী সাত দিনের মধ্যে এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন তাঁরা। যদি এ সময়ের মধ্যে আরোপিত ভ্যাট ও শুল্কের সঙ্গে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব থেকে সরকার সরে না আসে, তবে স্বেচ্ছায় কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ এবং সচিবালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি।
সদস্যরা বলেন, সরকারের এমন সিদ্ধান্ত সরাসরি প্রান্তিক কৃষক, শ্রমজীবী মানুষ এবং সাধারণ ভোক্তাদের জীবনে চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বিস্কুট ও কেকের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।
৯ জানুয়ারি বিস্কুট, কেক, আচারসহ বিভিন্ন পণ্যে মূসক ৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ, ফ্রুট ড্রিংকসে সম্পূরক শুল্ক ১০ থেকে ১৫ শতাংশ এবং আর্টিফিশিয়াল ও নন-কার্বোনেটেড ড্রিংকসে শুল্ক শূন্য থেকে ১৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পাশাপাশি ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূসক ৫ থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
বাপার সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য খাতের সঙ্গে দেশের প্রান্তিক কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের জীবিকা সরাসরি জড়িত। ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে প্রতিদিনের খাদ্যপণ্য যেমন বিস্কুট ও কেকের দাম বেড়ে যাবে। শ্রমজীবী মানুষ এসব কিনতে পারবেন না। এভাবে চলতে থাকলে কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে, আর এর দায় সরকারকে নিতে হবে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদিত পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে জুস, সস, আচার ইত্যাদি তৈরি করি। কিন্তু বর্ধিত ভ্যাটের কারণে এই পণ্যগুলোর দাম বাড়লে ভোক্তারা সেগুলো কিনতে আগ্রহ হারাবে। এর ফলে প্রান্তিক কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে হাজারো শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বে। তাই সরকারকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’