রপ্তানির বিপরীতে উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগের মতো শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ। এছাড়াও পোশাক খাতের পণ্য ও সেবায় শুল্কছাড়, প্রণোদনা অব্যাহত রাখা এবং এর কর হ্রাস করাসহ ৭ দফা দাবি জানানো হয়।
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে বিজিএমইএ পর্ষদের মতবিনিময় সভায় আসছে বাজেটে কার্যকরের জন্য এসব দাবি তুলে ধরেন বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি।
বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেন, ‘আমরা ২০৩০ সাল নাগাদ পোশাক শিল্প থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য নিয়েছি। এই লক্ষ্য অর্জনে সরকারের নীতি সহায়তা আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজন। এই সহায়তা না পেলে লক্ষ্যে পৌঁছানো কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।’
শিল্পের সংকট তুলে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে আমাদের পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ পিছিয়ে পড়েছি।’
তিনি যোগ করেন, ব্যাংক সুদ ১৫ শতাংশ হয়ে গেছে। ৫৬ শতাংশ মজুরি বাড়ানো হয়েছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পরিবহনসহ গত পাঁচ বছরে গড়ে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৫০ শতাংশ। অন্যদিকে গত ৮ মাসে প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলোর দরপতন হয়েছে ৮ থেকে ১৬ শতাংশ। এই অবস্থায় শিল্পাঞ্চলের বাইরে বিনিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত বাধাগ্রস্ত করবে বিনিয়োগ ও রপ্তানিকে।
এস এম মান্নান কচি বলেন, ‘অনেক কারখানা এরই মধ্যে শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছে। এখন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ না দিলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করেছি যাতে এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়। শিল্পাঞ্চলের কাজ শেষ হওয়া এবং জায়গা বুঝিয়ে দেওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে তারপর যেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য বাজেটে নীতি সহায়তার কথা উল্লেখ করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ আগামী ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকরের দাবি জানাই। এটি কার্যকর রাখলে বর্তমান সংকটকালেও গার্মেন্টস খাত স্বস্তিতে থাকবে। একই সঙ্গে প্রণোদনার নগদ অর্থ সহায়তার ওপর আয়কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।’
সরাসরি ও প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকরা আয়ের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রায় একটি বিশেষ হিসাবে সংরক্ষণ করতে পারেন। এটাকে এক্সপোর্টার্স রিটেইনশন কোটা বা ইআরকিউ হিসাব বলে। ইআরকিউয়ের ওপর আয়কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি।
অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, আব্দুস সালাম মূর্শেদী, বর্তমান পর্ষদের সিনিয়র সহসভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি আরশাদ জামাল (দীপু), সহসভাপতি (অর্থ) মো. নাসির উদ্দিন, সহসভাপতি মিরান আলী, আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, রকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, আশিকুর রহমান তুহিন, আনোয়ার হোসেন মানিক, মেসবাহ উদ্দিন খান, শামস মাহমুদ, রাজীব চৌধুরী, মো. শাহাদাত হোসেন, নুসরাত বারী আশা, মো. মহিউদ্দিন রুবেল, সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, মো. রেজাউল আলম মিরু এবং গাজী মো. শহীদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।