হোম > অর্থনীতি

এলসি যথেষ্ট, নজর এখন আমদানিতে

রোকন উদ্দীন, ঢাকা

প্রতীকী ছবি

প্রতিবছর রোজা এলেই তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, খেজুরসহ কয়েকটি পণ্যের বাজার যেন চড়ে যায়। তাই রোজার আগে এসব পণ্যের চাহিদা ও আমদানির হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে যায়। এবারের হিসাব বলছে, চাহিদার বিপরীতে আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে যথেষ্ট। এখন ঠিকমতো আমদানি হলে রোজার সময় এসব পণ্যের সংকট হওয়ার কথা নয়।

এমন ধারণা দিচ্ছেন ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকেরা। তবে তাঁরা আমদানির প্রক্রিয়া আরও সহজ করার কথা বলছেন।

আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। রোজার বাজার ধরার জন্য ঋণপত্র খোলা হবে জানুয়ারি শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। ফেব্রুয়ারি মাসে পাইকারি বাজারে রোজার পণ্যের বেচাকেনা শুরু হবে। তার আগে রোজার বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ৯ জানুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠায় ট্যারিফ কমিশন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে বছরে চিনির চাহিদা ২০ থেকে ২২ লাখ টন। সে হিসাবে ছয় মাসে লাগে ১০ থেকে ১১ লাখ টন। কিন্তু গত ছয় মাসে দেশে চিনি আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ৬৪ হাজার টন। এর মধ্যে রোজার সময় লাগে ৩ লাখ টন।

একইভাবে সয়াবিন, পাম, সূর্যমুখী মিলিয়ে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২২-২৩ লাখ টন। এর মধ্যে ৩ লাখ টন চাহিদা রয়েছে রমজান মাসে। সে হিসাবে ছয় মাসে ভোজ্যতেল লাগে ১১ লাখ ৫০ হাজার টনের বেশি। বিপরীতে আমদানি করা হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টন।

দেশে ছোলার বার্ষিক চাহিদা ২ লাখ টন। যার অর্ধেক প্রয়োজন হয় পবিত্র রমজানে। ছয় মাসে ১ লাখ টন ছোলার চাহিদার বিপরীতে আমদানি হয়েছে মাত্র ৪৮ হাজার টন।

মসুর ডালের চাহিদা সাড়ে ৩ লাখ টন, যার মধ্যে রমজান মাসে চাহিদা থাকে ১ লাখ টন। জুলাই থেকে জানুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত দেশে মসুর ডাল এসেছে ২ লাখ ৫১ হাজার টন।

এ ছাড়া বিদেশি ফল খেজুরের চাহিদা এখন সারা বছর। কিন্তু দেশে সারা বছরে যত খেজুর লাগে, তার অর্ধেক চাহিদা থাকে রমজান মাসে। সারা বছর খেজুরের চাহিদা ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টন। ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে পবিত্র রমজানে খেজুরের চাহিদা ৬০ হাজার টন। তবে গত জুলাই থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দেশে খেঁজুর আমদানি হয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৮৮৩ টন।

ছবি: আজকের পত্রিকা

এর বাইরে রমজান মাসে পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ে। তবে দেশের পেঁয়াজের বাজার রপ্তানিনির্ভর নয়। চাহিদার খুব সামান্যই আমদানি করতে হয়। দেশে ২৭ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে, যার মধ্যে রমজানে চাহিদা থাকে ৫ লাখ টন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ৬-৭ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। তবে সেটা মৌসুম শেষে। চলতি বছর রমজানের সময় মার্চ মাসে দেশে হালি পেঁয়াজের ভরা মৌসুম থাকবে। ফলে পেঁয়াজের ঘাটতি হবে না।

ভোজ্যতেল, ছোলা, মসুর ও মটর ডালের বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান টি কে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তি দাম, ডলারের উচ্চ মূল্য ও ডলার-সংকটে গত ছয় মাসে অনেকে পণ্য আমদানি করতে পারেননি। এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতাও বড় একটি কারণ। ফলে অনেক পণ্যের আমদানি কমেছে। তবে গত ডিসেম্বর থেকে পণ্য আমদানি বাড়ছে। কারণ, এ মুহূর্তে বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। যেসব ঋণপত্র খোলা হয়েছে, সেগুলোর বিপরীতে পণ্য যদি যথাসময়ে আমদানি হয়, তবে রোজার মাসে পণ্যের সংকট হবে না।

চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) ১ জুলাই থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অপরিশোধিত চিনি, চাল, মসুর ডাল, ছোলা ও খেজুরের ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে।

এবার খেজুর আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে ৮৬ হাজার টনের। গত বছর একই সময়ে ৪৮ হাজার টন খেজুরের ঋণপত্র খোলা হয়েছিল, অর্থাৎ খেজুরের ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে ৭৯ শতাংশ। এবার ১ লাখ ৮৯ হাজার টন ছোলার ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি। মসুর ডালের ঋণপত্র খোলার হার ২১ শতাংশ বেড়ে ২ লাখ ২ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। অপরিশোধিত চিনি আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলার হার শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ বেড়ে ৮ লাখ ৬ হাজার ৭১৯ টনে দাঁড়িয়েছে।

খেজুরের আমদানিকারক মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী হাজি এনায়েতুল্লাহ বলেন, অতিরিক্ত শুল্কের কারণে এবার খেজুরের আমদানি প্রায় বন্ধ ছিল। তবে গত ২১ নভেম্বর শুল্কছাড়ের পর অনেকে ঋণপত্র খুলছে। তারপরও ৪১ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। তার চেয়ে বড় বিষয় হলো ট্যারিফ ভ্যালু বাস্তবে কেনা দামের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে খেজুরের আমদানি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুল্কছাড়ের কারণে চাল, ভোজ্যতেল, খেজুরসহ নিত্যপণ্যের দাম রমজান মাসে স্থিতিশীল থাকবে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে মসুর ও ছোলার মজুত ও সরবরাহ তদারক করা দরকার বলে মনে করে সংস্থাটি।

ট্যারিফ কমিশনের বাণিজ্য নীতি বিভাগের উপপ্রধান মাহমুদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেহেতু আমদানি পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এবার শুল্কছাড় বেশি দেওয়া হয়েছে, তাই রমজানে পণ্যের বাজারে সমস্যা হবে না বলে আমরা মনে করছি।’

আদানির সাড়ে ৮৪ কোটি ডলারের বকেয়া পরিশোধে বাংলাদেশকে ৬ মাস সময়

রেমিট্যান্স কেনায় এক্সচেঞ্জ হাউসকে নতুন শর্ত

ব্যাংকারদের বিদেশ ভ্রমণে অনুমতির প্রয়োজন নেই

এয়ার পিউরিফায়ারে কর কমল ২৭ শতাংশ

কাজে সুযোগের আকাল

পুনর্বিমায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রাইম ইনস্যুরেন্সের জালিয়াতি

ট্রাম্পের অভিষেক ঘিরে উত্তেজনায় রেকর্ড উচ্চতায় বিটকয়েন

ফার্নিচার শিল্পের বিকাশে প্রয়োজন অধিক বিনিয়োগ: বাণিজ্য উপদেষ্টা

শিল্পের কাঁচামাল আমদানির মূল্য পরিশোধে এক বছর সময় পাবেন ব্যবসায়ীরা

বন্ধ পাট কারখানায় সারের গুদাম বানাবে সরকার: কৃষিসচিব

সেকশন