ঢাকা: নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেউলিয়া ঘোষণা করে আদালত। এতে লেগে যায় দীর্ঘ সময়। এসব প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া ঘোষণার এখতিয়ার বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের হাতে দেওয়ার অনুশাসন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবারের মন্ত্রিসভা বৈঠক থেকে এই পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
সচিব বলেন, দেউলিয়া করার বিষয়টি বর্তমান আইন অনুযায়ী হাইকোর্টে যেতে হয়। মন্ত্রিসভা আজকে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে দেউলিয়া করার বিষয়টি কোর্টের বাইরে ফয়সালা করা যায় কিনা। এতে সময় বা ভোগান্তি কমে যাবে। কোর্টে গেলে দীর্ঘদিন মামলা চলবে, এরপর হাইকোর্টে যেতে হয়, আপিল বিভাগে গেলে আবার রিভিউ করতে হবে।
আদালতের বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠান নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেউলিয়া ঘোষণার এখতিয়ার পেলে তা যুগান্তকারী দিক হবে বলে মনে করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি জানান, ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনের খসড়া যারা করছেন তারা বিষয়টি দেখবেন। আজ সোমবারের মন্ত্রিসভা বৈঠকে ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২১ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ১৯৯৩ সালের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্সটিটিউক্যাল অ্যাক্টের আলোকে বাংলাদেশের নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো চলছে। সেটাকে পরিবর্তন করে নতুন আইন করা হচ্ছে। কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্স কোম্পানি লাইসেন্স ছাড়া বাংলাদেশে কোনো অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। যদি কেউ দেউলিয়া হয়ে যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে ডিপোজিটের ব্যবস্থা রাখবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নন-ব্যাংকিং ফাইনান্সিং প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষকে আকর্ষণ করতে অনেক সময় ১৫ বা ১৬ শতাংশ সুদ দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এ জন্য সর্বোচ্চ সুদের হার বেঁধে দেওয়া হবে। যাতে করে মানুষ বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করতে পারে।
আগের আইন অনুযায়ী যেসব প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল, নতুন আইনে সেগুলোকে কোম্পানি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এ জন্য তাদের নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এই আইন অমান্য করলে ১০ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে। পাশাপাশি ফৌজদারি আইনে দোষীর বিচার চলবে। খসড়া আইনে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত জেল দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সরকারি পাসপোর্টধারীরা যাতে বতসওয়ানায় ভিসা ছাড়া যেতে পারেন, সেই চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
দেশের অনানুষ্ঠানিক ফান্ডগুলোকে ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেমের মধ্যে আনতে জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশলের খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। আনোয়ারুল বলেন, রূপকল্প ২০২১ এবং যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসছে তার একটা মডেল হিসেবে জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে।