বিজ্ঞপ্তি
চরাঞ্চলের কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে একযোগে কাজ করছে শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সামাজিক সংগঠন ফ্রেন্ডশিপ। সম্প্রতি এ কৃষি উন্নয়ন উদ্যোগের দ্বিতীয় পর্যায় সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
চরাঞ্চলের কৃষকদের ‘ফার্ম-টু-মার্কেট’ সহায়তা দিয়ে ক্ষমতায়নে কাজ করেছে উদ্যোগটি। ইতিমধ্যে টেকসই এই কৃষি উদ্ভাবন ৩৬টি চরের প্রায় ১০ হাজার কৃষকের জীবনমান উন্নত করেছে। টেকসই এ পদ্ধতি কৃষকদেরকে উৎপাদন বাড়িয়ে দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠতে এবং জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সহায়তা করেছে।
এই উদ্যোগের আওতায় কৃষকদের জন্য টেকসই কৃষি প্রযুক্তি, উৎপাদন বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ, কারিগরি সহায়তা ও বাজার সংযোগের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। এ সমন্বিত প্রচেষ্টা বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ চরাঞ্চলে কৃষি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করেছে। পাশাপাশি কৃষকদের সমৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে টেকসই উন্নয়নে কৃষির গুরুত্বকে প্রতিফলিত করেছে এই উদ্যোগ।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী অফিসার নাসের এজাজ বিজয় বলেন, বাংলাদেশের চরাঞ্চলগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ফ্রেন্ডশিপের সঙ্গে এই যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা কেবল কৃষকদের আয় বাড়াতেই সাহায্য করছি না; বরং খাদ্য নিরাপত্তা ও দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছি। কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ, দরকারি উপকরণ ও বাজারের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ তৈরিতে কাজ করছি। এতে তাঁরা বাধা পেরিয়ে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হবেন। ইতিবাচক ও শক্তিশালী ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য এ ধরনের উদ্যোগ খুবই কার্যকর।
ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রুনা খান বলেন, ‘এই উদ্যোগই প্রমাণ করে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সংকট সমাধানে এ ধরনের সম্মিলিত উদ্যোগ কতটা কার্যকর হতে পারে। কৃষকদের উন্নত প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ এবং বাজার সুযোগ প্রদান করে আমরা কেবল খাদ্য উৎপাদন বাড়াচ্ছি না; বরং জলবায়ু চ্যালেঞ্জের মধ্যে তাঁদের টিকে থাকার ক্ষমতাও বাড়িয়ে তুলছি। আমরা জীবন রক্ষার্থে ও সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছি। আমরা এমন একটি ভবিষ্যৎ গড়তে চাই, যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবেন না।’
এই উদ্যোগের একাধিক পর্যায়ে কৃষি চক্রের পুরোটায় সহায়তা দেওয়া হয়েছে। জলবায়ু ও লবণাক্ততাসহিষ্ণু বীজ, সার, কীটনাশকসহ কৃষকদের প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষিসম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, বাজার সংযোগ উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষকেরা কাজের সুযোগ বাড়াতে ও বৃহৎ পরিসরে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছেন। পাশাপাশি সৌরচালিত পাম্প ও ফসল শুকানোর প্রযুক্তি গ্রহণ করেছেন কৃষকেরা। ফলে কোনো রকমে জীবনধারণের কৃষি এখন আত্মনির্ভরশীল কৃষিতে পরিণত হয়েছে। তা ছাড়া, গুচ্ছগ্রাম নির্মাণের মতো অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রতিকূল আবহাওয়া প্রতিরোধের পাশাপাশি কৃষিকাজকে বাধামুক্ত করেছে।
এই উদ্যোগে পশুসম্পদ ব্যবস্থাপনাকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গবাদিপশুর টিকাদান, ডি-ওয়ার্মিং, কৃত্রিম প্রজনন ও উন্নত জাতের গবাদিপশু ও পোলট্রি সরবরাহ। এ সমন্বিত পদ্ধতি কৃষকদের আয়ের উৎসে বৈচিত্র্য এনেছে, যা কৃষক সমাজের সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করেছে।
১২০ বছর ধরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যবসা ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে সমাজে বিনিয়োগ, সেবামূলক কর্মকাণ্ড ও নতুন সম্ভাবনা তৈরি করে যাচ্ছে। ২০২৪ সালে ব্যাংকটি ২৯টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছে, যা বাংলাদেশের ক্রমাগত উন্নতির পথে তাদের অবিচল প্রতিশ্রুতির স্বাক্ষর বহন করে।
ফ্রেন্ডশিপ একটি আন্তর্জাতিক সামাজিক সংগঠন, যা ২২ বছর ধরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করছে। জীবন রক্ষা, দারিদ্র্যবিমোচন, জলবায়ু অভিযোজন ও ক্ষমতায়ন—এ চারটি অঙ্গীকার নিয়ে ফ্রেন্ডশিপ বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও সমাজে অবদান রেখে চলেছে।