অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোতে এলসি বা লেটার অব ক্রেডিট যথাযথভাবে মূল্যায়িত না হওয়ার প্রবণতা বাড়তে থাকায়, ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা আশঙ্কা করছেন, তাঁদের চালানের বিপরীতে পাওনা অর্থ হয় দেরিতে আসবে অথবা আদৌ আসবে না। এ কারণে বাংলাদেশে ভারতীয় রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য পতন লক্ষ করা যাচ্ছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু বিজনেসলাইনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের আঞ্চলিক চেয়ারম্যান যোগেশ গুপ্ত বিজনেসলাইনকে বলেন, ‘বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ, অর্থ প্রদানের নিশ্চয়তা খুবই নিচে নেমে এসেছে। রপ্তানিকারকেরা নিশ্চিত হতে পারছেন না যে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলো সময়মতো এলসি মূল্যায়ন করবে।’
যোগেশ আরও বলেন, ‘যদি বাণিজ্যে অর্থ প্রদান না হয়, তবে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক বিষয়টি কঠোরভাবে বিবেচনা করে এবং এ ক্ষেত্রে ফরেইন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট বা এফইএমএয়ের বিধান কার্যকর হয়। তাই ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা চালান পাঠাতে আগ্রহী নন। সাধারণ একটি ভীতি কাজ করছে যে, অর্থ সময়মতো আসবে না।’
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বিশ্বখ্যাত রেটিং সংস্থা মুডিস সম্প্রতি ছয়টি বাংলাদেশি ব্যাংকের রেটিং সংশোধন করেছে। মূলত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সভরেইন রেটিং নিম্নমুখী হওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে। রাজনৈতিক ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশের নিম্ন প্রবৃদ্ধির আশঙ্কাকে কেন্দ্র করে মুডিস বাংলাদেশের রেটিং কমিয়েছে।
রেটিং কমানোর বিষয়টিও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে আরও প্রকট করেছে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি এবং উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে সীমান্ত বাণিজ্যে এক মাসের মধ্যে বড় ধাক্কা লাগতে পারে।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘পেট্রাপোল-বেনাপোল রুট দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য এখনো চলছে। তবে এটি কমে আসার সম্ভাবনা আছে। ভারত ও বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের কমসংখ্যক লেটার অব ক্রেডিট ইস্যু করছে। অর্ডার থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা চালান পাঠাতে ইচ্ছুক নন, কারণ তারা অর্থ প্রদানের বিষয়ে শঙ্কিত।’ তিনি বলেন, ‘যদি উত্তেজনা দ্রুত প্রশমিত না হয়, তবে এক মাসের মধ্যে সীমান্ত বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়বে।’