ফেনী নদীর ভাঙনকবলিত ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের জয়পুর-সোনাপুর গ্রাম ও তিলকের চর এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি। হুমকির মুখে আশ্রয়ণ প্রকল্প।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে বারবার লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো লাভ হয়নি। নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসী মাঝেমধ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে ফেনী নদীর তীরে বিক্ষোভ করেন। লাঠিসোঁটা নিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের ধাওয়া করেন।
গ্রামবাসীর বিক্ষোভের মুখে বালু উত্তোলন বন্ধ করে কিছু সময়ের জন্য পালিয়ে গেলেও পরে শক্তি সঞ্চয় করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আবার হানা দেয় বালুদস্যুরা। কিছুদিন আগে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত একটি ড্রেজার মেশিন ও একটি বালুভর্তি বোট আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এলাকাবাসী জানান, মিরেরসরাই এলাকার দুজন এবং ছাগলনাইয়ার নিজকুঞ্জরা গ্রামের হারুনের নেতৃত্বে একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি ড্রেজার মেশিন ও বালু বহনকারী ইঞ্জিনচালিত নৌকার সাহায্যে ভাঙনকবলিত ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের জয়পুর-সোনাপুর গ্রাম ও তিলকের চর এলাকায় তীর ও চর কেটে মাটি ও বালু নিয়ে যাচ্ছে। ফলে ফেনী নদীতে বিলীন হচ্ছে বহু ঘরবাড়ি-কৃষিজমি, হুমকির মুখে রয়েছে গৃহহীন মানুষের আবাসস্থল আশ্রয়ণ প্রকল্প।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন, অহিদের রহমান, আমির হোসেন, ফিরোজ, মোহাম্মদ আলী, রফিক, জোসনা ও সাহারা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘অবৈধভাবে ফেনী নদীর তীর ও চর কাটা অব্যাহত থাকলে খুব দ্রুতই আশ্রয়ণ প্রকল্প নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।আমরা আবার গৃহহীন হয়ে যাব। ওরা অস্ত্রধারী তাই ভয়ে আমরা কিছু বলতে সাহস পাই না।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন পলাশ বলেন, ‘বালুসন্ত্রাসীদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। নিরুপায় হয়ে এলাকার কৃষিজমি ও বাড়িঘর রক্ষা করার জন্য আমরা জীবনবাজি রেখে মাঝেমধ্যে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌমিতা দাশ বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বলেন, ভাঙনকবলিত এবং আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা হওয়ায় তিলকের চর এলাকাটি ইজারা দেয়নি ফেনীর জেলা প্রশাসন। ইজারাবিহীন অবৈধভাবে যারা বালু উত্তোলন করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।