
প্রশ্ন: আমার বয়স ২৫ বছর। গত বছর পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়। সম্প্রতি জানতে পারি, আমার স্বামীর আরও একটি পরিবার আছে, যারা দেশে থাকে না। স্বামী নিজেও এখানে থাকে না। বিয়ের সময় প্রথম বিয়ের কথা জানায়নি। আমি জানার পর স্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে, প্রথম বউয়ের মতেই বিয়ে হয়েছে। আমি এই সংসার করতে চাই না। সে আমাকে তালাক দেবে না বলে জানিয়েছে। পুরো দেনমোহরের টাকাও সে দেয়নি। আমাকে সে এত দিন চাকরিও করতে দেয়নি। বিদেশ থেকে আমাকে নিয়ন্ত্রণ করত। আর বলত, আমাকে নিয়ে যাবে। আমি নতুন করে জীবন শুরু করতে চাই। আর অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে চাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, কুমিল্লা।
উত্তর: আপনার স্বামী যে তাঁর প্রথম বিয়ের কথাটি গোপন করে গেছেন, তা প্রতারণার শামিল। আপনাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে বলেছেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বিয়ে রেজিস্ট্রি করে হওয়ার কথা। বিয়ের সময় দুই পক্ষকেই জানাতে হয় বৈবাহিক অবস্থা কী; অর্থাৎ তাঁরা কি বিবাহিত নাকি তালাকপ্রাপ্ত, নাকি কুমার/কুমারী, অর্থাৎ সেটি তাঁদের প্রথম বিয়ে কি না। সেখানে আপনার স্বামী যদি নিজেকে কুমার বলে বিয়ে করে থাকেন, তাহলে তিনি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন। এ বিষয়ে আপনি স্থানীয় থানায় তাঁর নামে মামলা করতে পারবেন। এমনকি তিনি যদি প্রথম পক্ষের অনুমতি নিয়েও থাকেন, তাহলেও তিনি অপরাধী। আপনি এ জন্য তাঁকে তালাক দিতে পারবেন। আপনার স্বামী আপনাকে তালাক দিন বা না দিন। কাবিননামার ১৮ নম্বর ক্লজে আপনাকে সে ক্ষমতা দেওয়া আছে। আপনি তাঁর দেশের ও বিদেশের ঠিকানায় এবং ই-মেইল করে তালাকের নোটিশ পাঠাতে পারেন।
দেনমোহরের পুরো টাকা তিনি দেননি বলেছেন। এ ক্ষেত্রে দেনমোহরের টাকা আপনার প্রাপ্য। তালাক যে পক্ষই দিক না কেন, স্বামীকে দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করতে হবে। কাজেই তালাকের নোটিশের সঙ্গে আপনি দেনমোহরের বাকি টাকা পরিশোধের জন্য একটি নোটিশ পাঠাতে পারেন। এতে যদি কাজ না হয়, সে ক্ষেত্রে আপনি পারিবারিক আদালতে দেনমোহর এবং তিন মাসের খোরপোশ (যদি আগের ভরণপোষণ দিয়ে থাকে), অনাদায়ে বিয়ের পর থেকে তালাকের নোটিশ দেওয়ার পরের তিন মাসের ভরণপোষণের জন্য আবেদন করতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন ,বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট