মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা নদীসহ খাল-বিলে চায়না দোয়ারি ফাঁদ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে নির্বিচারে মারা পড়ছে পোনাসহ সব ধরনের মাছ। অভিযান পরিচালনার পরেও বন্ধ হচ্ছে না এই ফাঁদ দিয়ে মাছ শিকার।
সরেজমিনে পদ্মা নদীসহ ভাতছালা, দিয়ারবিল ও গোপীনাথপুর বিলে দেখা যায়, অসংখ্য বাঁশের খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে। আর খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়েছে চায়না দোয়ারি ফাঁদ। কমপক্ষে ৮০ ফুট লম্বা একেকটি ফাঁদ। এ ছাড়া উপজেলার বয়রা, হারুকান্দি ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকায় পদ্মাপাড় রক্ষাবাধ রয়েছে।
এ বাঁধের আন্ধারমানিক খালপাড় বয়রা, দাশকান্দি বয়রা, দড়িকান্দি, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বকচর, আলগীচর, জগন্নাথপুর, রামকৃষ্ণপুর, হারুকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদপুর, হারুকান্দি এলাকার কয়েকটি জায়গায় জিও ব্যাগ কেটে চায়না দোয়ারি (জাল), সাধারণ দোয়ারি ও জিও ব্যাগে বাঁশ দিয়ে গর্ত করে চায়না জাল বেঁধে রাখায় বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।
চায়না দোয়ারি দিয়ে মাছ শিকারি কয়েকজন জেলে জানান, তাঁরা এই বর্ষায় এ ফাঁদ দিয়ে মাছ শিকার করছেন। একেকটি চায়না দোয়ারির দাম পড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। সহজে মাছ ধরা পড়ে। পরিশ্রমও কম, আয় বেশি।
চালা ইউনিয়নের হারেস নামের এক জেলে বলেন, ‘ভাতছালা বিলে শতকরা ৯০ ভাগ মৎস্য শিকারি চায়না দোয়ারি ফাঁদ দিয়ে মাছ ধরে।’
চালা ইউনিয়নের সট্টি গ্রামের কালাম দেওয়ান বলেন, ‘পুরো ভাতছালা বিলে হাজার হাজার চায়না দোয়ারি ফাঁদ পেতে রাখা হয়েছে। ছোট ছোট পোনা ধরছে তাঁরা। আমি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি।’
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘চায়না দোয়ারি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে আমার ইউনিয়নের পদ্মা পাড়ের বেড়ি বাঁধেরও ক্ষতি করছে জেলেরা। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি।’
হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘চায়না দোয়ারি জালের বিরুদ্ধে অভিযান নেওয়া হবে। কয়েক দিন আগে ইউএনও স্যার আর আমি ১ হাজার মিটার জাল জব্দ করেছি।’
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ধূলসুরা এলাকায় কয়েক দিন আগে ১ হাজার মিটার চায়না জাল ধ্বংস করেছি। কারেন্ট জাল এবং চায়না দোয়ারির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’