যশোর প্রতিনিধি
যশোর জেনারেল হাসপাতালের ৮ কোটি টাকার টেন্ডারে (দরপত্র) অংশ নিতে হামলার শিকার হয়েছেন মাগুরার দুটি সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাঁদের মারধর করে শিডিউল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, র্যাব ও পুলিশের সামনে হামলা করে তাঁদের শিডিউল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে; কিন্তু তারা কোনো ভূমিকাই রাখেনি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে র্যাব ও পুলিশ। তাঁরা বলছেন, তাদের সামনে কোনো ঘটনা ঘটেনি। হাসপাতালের নিচতলায় গোলযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কিছুই পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৫০ শয্যা যশোর জেনারেল হাসপাতালের ২০২২-২৩ অর্থবছরের সার্জিক্যাল, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য ৮ কোটি ৯ লাখ টাকার দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত দিন ছিল গতকাল। ১৮১টি দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত। সাড়ে ৯টার দিকে মাগুরার দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মামুন ড্রাগস ও অপরাজিতা ড্রাগসের প্রতিনিধিরা আহ্বানকৃত টেন্ডারের মধ্যে ওষুধ, গজ-ব্যান্ডেজ-তুলা, কেমিক্যাল, আসবাব ও ক্রোকারিজ সরবরাহের ৬ কোটি টাকার দরপত্র জমা দিতে যান। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের সামনে টেন্ডার বক্সে জমা দেওয়ার আগ মুহূর্তে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁদের শিডিউল পেপার ছিনতাই করে নেয়।
এদিকে ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের কাছে অভিযোগ দিলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মামুন ড্রাগসের পরিচালক আজিজুল হক। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের টেন্ডার আহ্বান নিয়ম অনুযায়ী আমার ম্যানেজার হাফিজুর রহমান দরপত্র জমা দিতে যান। এ সময় পুলিশ ও র্যাবের উপস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা আমার ১৩টি শিডিউল পেপার ছিনতাই করে নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমি হতাশ হয়েছি। এমনকি তত্ত্বাবধায়কের কাছে অভিযোগ দিলেও তিনি বেলা ১টার পর অভিযোগ গ্রহণ করেন। এ পরিস্থিতিতে দরপত্র স্থগিত করে পুনঃদরপত্রের আহ্বান জানাই।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করেছি। ১৫ সেপ্টেম্বর টেন্ডারের মূল্যায়ন হবে। দরপত্র স্থগিত ও পুনঃদরপত্রের কোনো সুযোগ নেই।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) বেলাল হুসাইন বলেন, ‘হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ছিল। সেখানে কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিচতলায় গোলযোগের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়; কিন্তু সেখানে কিছু পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার এম নাজিউর রহমান জানান, তাঁদের সামনে কোনো ঘটনা ঘটেনি। ভুক্তভোগী বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেউই দরপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।