প্রদীপ কুমার গোস্বামী, মিঠাপুকুর (রংপুর)
রংপুরের মিঠাপুকুরে কৃষকেরা আবারও ক্ষতিকর তামাক চাষে ঝুঁকছেন। দুটি কোম্পানির প্রলোভনে পড়ে তাঁরা প্রায় ১৫ বছর পর এ চাষ শুরু করেছেন।
উপজেলার দুর্গাপুর, বড়হযরতপুর, মির্জাপুর ও বালারহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে তামাকখেত দেখা গেছে। এই উপজেলায় প্রায় দেড় দশক ধরে তামাক চাষ বন্ধ ছিল। অভিযোগ উঠেছে, তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী দুটি কোম্পানির মাঠকর্মীরা বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে কৃষকদের তামাক চাষে উৎসাহিত করছেন।
মিঠাপুকুরে দুই কোম্পানির তালিকাভুক্ত ২৩২ জন কৃষক রয়েছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, কোম্পানি দুটি তাঁদের উৎসাহিত করার জন্য বিনা মূল্যে বীজ সরবরাহ এবং বাকিতে সার দিয়েছে।
কৃষক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘তামাক চাষ করা ঠিক হচ্ছে না; কিন্তু অগ্নিমূল্যের বাজারে সংসারের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে চাষ করতে বাধ্য হচ্ছি। ৫০ শতক জমিতে ১৬ মণ তামাক উৎপাদন হবে। এতে সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। কোম্পানি প্রতি কেজি তামাক ১৭০ টাকা দরে কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে করে ১৬ মণের দাম হবে ১ লাখ ৮ হাজার ৮০০ টাকা। খরচ বাদ দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব হবে।’
তৌহিদুলের দেওয়া তথ্যমতে, ৫০ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করলে ৪০ থেকে ৫৫ মণ উৎপাদন হবে। খরচ হবে ১২ থেকে ১৬ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে ভুট্টা চাষে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার বেশি আয় করা সম্ভব হবে না।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহজাহান আলী বলেন, বীজভেদে ভুট্টার উৎপাদন কম-বেশি হয়ে থাকে। তবে ভুট্টার তুলনায় বেশি লাভজনক হওয়ায় চাষিরা তামাক চাষে ঝুঁকছেন।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইফুল আবেদীন বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় তামাক চাষ হয় না; বরং আমরা চাষিদের নিরুৎসাহিত করি। এ কারণে তামাক চাষের বিস্তারিত তথ্য জানা নেই।’