পথেঘাটে বখাটের উৎপাত, কুপ্রস্তাব ও বিয়ের প্রস্তাবে অতিষ্ঠ হয়ে এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় নাসরিন আক্তার (১৩) নামে ওই ছাত্রী ৮ম শ্রেণিতে পড়ত।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের উত্তর আউরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নাসরিন আক্তার ওই গ্রামের দিনমজুর মো. নাসির হাওলাদারের মেয়ে ও কাঠালিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
স্বজন ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, একই গ্রামের শাহজালাল ওরফে জালাল আকনের বখাটে ছেলে সৈকত আকন (২৬) প্রায়ই স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে নাসরিনকে উত্ত্যক্ত করতেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে নাসরিন ঘরের বারান্দায় আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
নাসরিনের চাচা জহিরুল ইসলাম জানান, প্রতিবেশী ও সরকারি তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ডিগ্রি কলেজের অফিস সহকারী জালাল আকনের বখাটে ছেলে আকন স্কুলে আসা যাওয়ার পথে নাসরিনকে উত্ত্যক্ত করতেন। বিষয়টি সবাই জানত। এ ব্যাপারে আকনের অভিভাবককে বহুবার জানানো হয়েছে। কিন্তু তাঁর বাবা জালাল ছেলেকে না ফিরিয়ে বরং কয়েক দিন আগে স্থানীয় এক ঘটকের মাধ্যমে নাসরিনের পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাবও পাঠান।
নাসরিনের মা চম্পা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে নাসরিন কাঠালিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে পড়ত। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে আমার মেয়েকে সৈকত আকন প্রায়ই বাজে কথা বলত। এ নিয়ে মেয়েটা সব সময় চিন্তিত থাকত। আজ বিকেলে আমি আমার বাবার বাড়ি বড় কাঠালিয়া যাই, নাসরিন এ সময় ঘরে একা ছিল। সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে এসে পেছনের বারান্দায় আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে নাসরিনকে ঝুলতে দেখতে পাই। আমার ডাক-চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে।’
কাঠালিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য (মেম্বর) নুরুল আলম মিলু বলেন, ‘সৈকত নাসরিনকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ডিস্টার্ব করত। ঘটনার দিন মেয়েটির মা চম্পা বেগম তার বাবার বাড়ি ছিল। ঘর ফাঁকা পেয়ে সে আত্মহত্যা করে।’
কাঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুরাদ আলী বলেন, ‘নাসরিনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’