নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরীতে আলোচিত মিতু হত্যা মামলার পলাতক আসামি খায়রুল ইসলাম কালুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে নগরীর আকবরশাহ থানাধীন ছিন্নমূল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি টিম।
পুলিশ বলছে, রাঙ্গুনিয়া থানার একটি মামলায় পিবিআই তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার খায়রুল ইসলাম কালু রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে।
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কি আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পিবিআই খাইরুল ইসলাম কালুকে গ্রেপ্তারের পর রাঙ্গুনিয়া থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। আজ আমরা তাঁকে আদালতে সোপর্দ করেছি।’
মিতু হত্যা ছাড়াও ২০১২ সালে রাঙ্গুনিয়া থানা-পুলিশের ওপর হামলা মামলার পলাতক আসামি ছিলেন কালু।
পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মিতু হত্যা মামলায় এজাহারনামীয় সাত নম্বর পলাতক আসামি ছিলেন কালু। মিতু হত্যাকাণ্ডের পর কালু বিভিন্ন ছদ্মবেশে আত্মগোপনে ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য পেয়ে পরে তাঁকে আকবরশাহ ছিন্নমূল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি।’
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে নগরীর জিইসি এলাকায় মাহমুদা খানম মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন ৬ জুন নিহতের স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন।
পিবিআই মামলাটির তদন্ত শেষে ২০২২ সালে ১০ অক্টোবর মামলার বাদী বাবুলকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন—এহতেশামুল হক ভোলা (৫৪), মোতালেব মিয়া ওয়াসিম (৩৩), আনোয়ার হোসেন (২৮), শাহজাহান মিয়া (২৮), কামরুল ইসলাম সিকদার মুসা (৪০) ও খায়রুল ইসলাম কালু (২৮)।
গত ১৩ মার্চ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ সময় মুসা ও কালুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বর্তমানে চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৬ জুন এই মামলায় মো. আনোয়ার ও মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের জবানবন্দিতে মুসাকেই হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
জবানবন্দিতে বলা হয়, নুরুন্নবী, কালু, মুসা ও ওয়াসিম সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। নুরুন্নবী ও কালু মিতুকে ছুরিকাঘাত করেন।
এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে মুসা ও কালু পলাতক ছিলেন। কালু গ্রেপ্তার হলেও মুসা এখনো নিরুদ্দেশ।