নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চর ওয়াপদায় শেখ নাসির উদ্দিন মাইজভান্ডারী নামে এক বৃদ্ধের পায়ুপথে টর্চ ঢুকিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শাহনেওয়াজের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এমন পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। তারা বলছে, এতে ইন্ধন দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান ভূঞা।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে চর ওয়াপদা ইউনিয়নের থানারহাটসংলগ্ন আমানতগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শেখ নাসির উদ্দিন মাইজভান্ডারীর সঙ্গে এলাকার একটি মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে যুবলীগের সভাপতি শাহনেওয়াজের বিরোধ রয়েছে। মসজিদ নির্মাণের কাজে শাহনেওয়াজের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী চাঁদা দাবি করার অভিযোগে শেখ নাসির মামলা করেছেন। মামলার পর থেকেই হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন।
শেখ নাসির উদ্দিনের ছেলে একই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. রিপন বলেন, ‘শনিবার রাতে স্থানীয় থানারহাট বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁর বাবা। পথে আমানতগঞ্জের দক্ষিণ পাশে জাহের মেম্বারের পুরাতন বাড়িসংলগ্ন ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শাহনেওয়াজের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা পথ রোধ করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা বাবার মুখ বেঁধে পাশের জঙ্গলে নিয়ে মারধর করে। একপর্যায়ে বাবার পায়ুপথে টর্চ ঢুকিয়ে দেয়। এতে বাবা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তখন সন্ত্রাসীরা তাঁকে ফেলে চলে যায়। পরে বাবার জ্ঞান ফিরে এলে তিনি চিৎকার করেন। আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে। আজ রোববার ভোরে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাহনেওয়াজের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি জবাব দেননি। পরে ফোনে কথা হয় চর ওয়াপদা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান ভূঞার সঙ্গে। তিনি দাবি করেন, এ ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই জড়িত নন। ঘটনাটি জানতেনও না। পরে লোকমাধ্যমে শুনেছেন।
চরজব্বার থানার ওসি দেবপ্রিয় দাশও জানান, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একজন এসআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতেল আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সৈয়দ মহি উদ্দিন আবদুল আজিম জানান, আজ সকালে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচার চালিয়ে টর্চটি বের করা হয়। জেনারেল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান মানিকের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে রোগী সুস্থ আছেন। আরও কিছুদিন তাঁকে চিকিৎসাধীন থাকতে হবে।