নোয়াখালী প্রতিনিধি
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ার হামাস্ক্রাল শহরে নিজ দোকানের আফ্রিকান কর্মচারীর হাতে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন মোহাম্মদ হাসান (৩৩) নামের এক বাংলাদেশি যুবক। ঘটনার পর হত্যাকারী তাঁর বাসা ও দোকানে থাকা টাকা এবং মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ৬-৭ বছর আগে আফ্রিকায় ওই দেশের সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন হাসানের বড় ভাই টিপু।
গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মোহাম্মদ হাসান নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের জিরতলী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য জিরতলী গ্রামের গুনহাজী বেপারি বাড়ির মৃত আমিন উল্যা দরবেশের ছেলে। আট ভাই ও দুই বোনের মধ্যে হাসান ছিলেন চতুর্থ।
চাচা কামাল উদ্দিন বলেন, জীবিকার তাগিদে বড় ভাইয়ের মাধ্যমে ১৬ বছর আগে আফ্রিকায় যান মোহাম্মদ হাসান। আফ্রিকায় তাঁর মৃত ভাই টিপু ছাড়াও ছোট ভাই হেলালও থাকেন। আফ্রিকায় যাওয়ার পর ভাইদের সহযোগিতায় প্রিটোরিয়ার হামাস্ক্রাল শহরে নিজের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু করেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জুনে বাড়ি আসার কথা ছিল তাঁর। পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর বিয়েরও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।
হাসানের ছোট ভাই হেলাল উদ্দিনের বরাত দিয়ে কামাল বলেন, নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করার জন্য ওই দেশের (আফ্রিকান) এক যুবককে কর্মচারী হিসেবে নেন হাসান। দীর্ঘদিন পর বাড়ি আসবেন, তাই টাকা ও মূল্যবান মালামাল নিজের বাসায় রাখেন হাসান। শুক্রবার রাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাসায় গিয়ে খাওয়ার পর আফ্রিকান কর্মচারীসহ ঘুমিয়ে যান হাসান। রাতের কোনো একসময় আফ্রিকান ওই কর্মচারী ঘুমের মধ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হাসানের ওপর হামলা চালিয়ে টাকা ও মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। হাসানের চিৎকারে পাশের লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ছেলেকে হারিয়ে জ্ঞান হারাচ্ছেন বৃদ্ধ মা জাহানারা বেগম। পরিবারের পক্ষ থেকে হাসানের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশ সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার থাবানচু এলাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে মো. গোলাম মোস্তফা (৩৮) নামের এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। নিহত মো. গোলাম মোস্তফা নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাবিলপুর গ্রামের জয়নাল আবেদিন মেম্বার বাড়ির মৃত জয়নাল আবেদিনের ছেলে।