নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলীতে জোড়া খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন সাগরিকা এলাকার ‘কিশোর-তরুণ গ্যাংয়ের’ অন্যতম নিয়ন্ত্রক মো. ফয়সাল (২৪)। ফয়সাল জোড়া খুনের মূল পরিকল্পনাকারীও। র্যাবের একটি অভিযান দল আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ওই বাসাতে ফয়সাল আত্মগোপনে ছিলেন।
আজ সকালে নগরীর চান্দগাঁও র্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ফয়সাল নোয়াখালীর কবিরহাট এলাকার মো. নূর নবীর ছেলে। তাঁকে নগরীর পাহাড়তলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম সংবাদ সম্মেলনে জানান, ফয়সাল কারাগারে থাকা ইলিয়াছ মিঠুর সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন।
গত সোমবার (৮ মে) রাতে নগরীর পাহাড়তলী থানার সাগরিকা বিটাক মোড়ে ছুরিকাঘাতে মো. মাসুম (৩০) ও মো. সবুজ (২০) নামে দুই যুবক খুন হন। মাসুম ব্যাটারি শ্রমিক এবং সবুজ অটোরিকশা চালক। এ ঘটনায় মাসুমের ভাই মনির হোসেন বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে পাহাড়তলী থানায় মামলা করেন। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাগরিকা এলাকার ‘কিশোর-তরুণ গ্যাংয়ের’ কথিত বড় ভাই ইলিয়াছ মিঠুসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে। ইলিয়াছ পাহাড়তলী থানা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
ফয়সালের আগে গ্রেপ্তার হওয়া ৮ জনের মধ্যে ৪ জনই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। র্যাব জানায়, তাঁদের জবানবন্দিতে হত্যার ঘটনায় ফয়সালের পূর্বপরিকল্পনার কথা সুস্পষ্ট হয়েছে।
বিষয়টি তাঁদের ‘বড় ভাই’ ইলিয়াছ মিঠুকে জানান। রাত ৮টার দিকে শিহাবকে ফোন করে ঘটনা মীমাংসার জন্য ইলিয়াসের অফিসে আসতে বলা হয়। ইলিয়াসের কথামত শিহাব তাঁর বন্ধু মাসুম, সজীব, ফাহিম, রোকন, রজিন, তুহীন, মেহেদী হাসান, ইউসুফ ও প্রান্তসহ ইলিয়াসের অফিসে যান। সেখানে আগে থেকেই ইলিয়াসের নির্দেশে ও ফয়সালের পূর্বপরিকল্পনায় রবিউলসহ ২০/২৫ জন কিশোর দেশীয় অস্ত্রে প্রস্তুত থাকে। শিহাব ও তাঁর সঙ্গে থাকা বন্ধুরা সেটি জানতেন না।
ইলিয়াসে অফিসে সবাই হাজির হলে একপর্যায়ে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই সময় ‘বড় ভাই’ ইলিয়াছ মিঠু ফয়সাল ও রবিউলকে দেখিয়ে বলেন— ‘শালাদের মার’। একপর্যায়ে মাসুম ও সজীবকে একাধিক ছুরিকাঘাত করে ফয়সাল, রনি ব্রো, বাবু এবং আকাশ। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনই মারা যান। আহত হন শিহাব এবং তাঁর ভাই।
হত্যাকাণ্ডে যারা অংশ নিয়েছেন তাঁদের সবার বয়স ১৬ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে বলে জানিয়েছেন র্যাব চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম।