Ajker Patrika
হোম > অপরাধ > চট্টগ্রাম

যেখানেই যান, ঘুষ খান শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ

শিপ্ত বড়ুয়া, রামু (কক্সবাজার) 

যেখানেই যান, ঘুষ খান শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ

কক্সবাজারের রামু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পুরোনো। আগে তিনি দেশের আরও কয়েকটি স্থানে একই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের যেখানেই গেছেন, সেখানেই তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আজকের পত্রিকার এই প্রতিবেদকের হাতে আসা নূর মোহাম্মদের আগের তিন কর্মস্থলের কিছু নথি পর্যালোচনা করে মিলেছে এমন তথ্য। বর্তমান কর্মস্থলেও তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে বেসরকারি স্কুল ও মাদ্রাসা এমপিওভুক্তি, শিক্ষকদের তালিকাভুক্তি, বেতনের স্কেল বৃদ্ধি, নামের ভুল সংশোধন, মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনসহ নানা বিষয়ে বর্তমান কর্মস্থলে ঘুষ নেওয়ার সাতটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি লিখিত এবং ছয়টি মৌখিক পেয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

আজকের পত্রিকার হাতে আসা ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি নোটিশে নূর মোহাম্মদকে ‘দুর্নীতিপরায়ণ’ হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। এ ছাড়া একই বছর তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। রামুতে কর্মরত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ এর আগে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিশাখা-১০ (মাধ্যমিক-১)-এর ১০৬৮ নম্বর স্মারক অনুযায়ী, ২০১৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সেমিস্টারের উপবৃত্তি দিতে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে টাকা নেওয়া, ২০১৫ সালে বিনা মূল্যের বই বিতরণে বিভিন্ন স্কুল থেকে টাকা আদায়, খেদামারা উচ্চবিদ্যালয় পরিদর্শনের পর পরিদর্শন বই ফেরত আনার জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ তদন্তে রাঙামাটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেই তদন্তে তৎকালীন বাঘাইছড়ি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছিল বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। 

এসব বিষয় উল্লেখ করে তাঁকে কেন চাকরিচ্যুত করা হবে না, এ মর্মে কারণ দর্শাতে নোটিশ জারি করা হয়েছিল। পাশাপাশি সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫-এর বিধি ৩-এর উপবিধি (বি) ও (ডি) অনুযায়ী তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। তবে সেই নোটিশের আর অগ্রগতি নেই, পরবর্তী সময় তাঁকে রামুতে পদায়ন করা হয়। 

নিজের বেতন বাড়াতে ঘুষ দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ধেছুয়াপালং উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমান গণি। তবে একই বিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রধান শিক্ষক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেন। এখন লেনদেনের অমিল হওয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তার ওপর খেপেছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ওসমান গণি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলা শিক্ষা অফিসে সব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আপাতত কিছু বলতে পারছি না। শনিবারের পর বিস্তারিত জানানো হবে। সেদিন জেলায় মিটিং আছে।’

এদিকে প্রধান শিক্ষক ওসমান গণির কাছ থেকে ঘুষ চাওয়ার ঘটনা সামনে আসার পর উপজেলার একাধিক বেসরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষকের কাছ থেকে বদলি, বেতন বৃদ্ধি, এমপিওভুক্তি, নাম সংশোধনসহ নানা কারণে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার রাহমানিয়া মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক তাঁদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেছেন। একজন শিক্ষক বলেন, ‘আমরা তাঁর দুর্নীতির বিষয়ে মানববন্ধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু পরে ভয়ে আর তা করা হয়নি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে রামু উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের অফিসে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি আজকের পত্রিকার ঢাকা অফিস থেকে তাঁর নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

লিখিত অভিযোগ পেলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা মুস্তফা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন বলেন, প্রায় এক বছর ধরে রামুতে দায়িত্ব পালন করছেন নূর মোহাম্মদ। এর আগে সাতকানিয়া উপজেলায়ও একই ঘুষকাণ্ডে জড়ান তিনি। এবার সর্বশেষ রামুর কয়েকটি বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে।

নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার একাধিক অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ধেছুয়াপালং উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমান গণি ঘুষ দাবির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। রামুর আরও পাঁচ-ছয়জন শিক্ষক মৌখিকভাবে একই অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।’

নোয়াখালীতে ৯ দোকানে অভিযান, ১২ হাজার টাকা দণ্ড

নোয়াখালীতে স্বামী-স্ত্রী আটক, ২ হাজার ইয়াবা জব্দ

বিমানবন্দরে চাঁদপুর পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ছেলেসহ গ্রেপ্তার

উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে কমিউনিটি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

চট্টগ্রামে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৬০ টাকা নির্ধারণ

বান্দরবানে ২০ রোহিঙ্গাকে আটক করল বিজিবি

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

কসবায় স্ত্রী-শ্যালিকাকে হত্যা: চট্টগ্রাম থেকে স্বামী গ্রেপ্তার

টেকনাফে অপহরণকারীর আস্তানায় মিলল ১১ নারী ও শিশু

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে দুই জাহাজের সংঘর্ষ