কুমিল্লার চান্দিনায় একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) দুই নারী-পুরুষ কর্মীকে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্জন বাগানে নিয়ে গিয়ে পুরুষ কর্মীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। আর নারী কর্মীকে নগ্ন করে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হয়। মোবাইল ফোনে তাঁর নগ্ন দেহের ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করেছেন কয়েকজন যুবক।
গতকাল সোমবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চান্দিনা পৌরসভার তুলাতলী দক্ষিণপাড়া দিঘির পারে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার দুজন আইডিএফ নামে একটি এনজিওর চান্দিনা শাখায় কর্মরত। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার ৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন এনজিওটির পুরুষ কর্মী।
স্থানীয়রা জানান, আইডিএফের এই দুই কর্মী তুলাতলী গ্রামে ঋণের কিস্তি আদায় করতে গেলে ফিরতে সন্ধ্যা হয়। এলাকার কয়েক যুবক তাঁদের আটক করে গ্রামের শেষ মাথায় এতবারপুর মালিবাড়িসংলগ্ন একটি মৎস্য প্রজেক্টের পাড়ে নিয়ে তাঁদের কাছ থেকে আদায় করা কিস্তির টাকা কেড়ে নেন। রুহুল আমিন নামের এক লোক দেখে ফেলায় তাঁকে হাত ও চোখ বেঁধে তুলাতলী দক্ষিণপাড়া দিঘির পারে নিয়ে আটকে রাখা হয়। এনজিওটির পুরুষ কর্মীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর এবং বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। নারী কর্মীকে নগ্ন করে যৌন নির্যাতন এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করা হয়।
আইডিএফের পুরুষ কর্মী আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁরা মোবাইলে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে এবং ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ২ লাখ টাকা দাবি করেন। তখন ওই নারী তাঁর বোনকে ফোন করে নির্যাতনকারীদের বিকাশ নম্বরে ২০ হাজার টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তাঁরা বাকি টাকা না পেলে ভিডিও ডিলিট করবে না বলে জানান এবং তাঁর নারী সহকর্মীর ওপর অত্যাচার করতে থাকেন। পরে গ্রামবাসী টের পেয়ে ‘ডাকাত’ বলে ধাওয়া করলে নির্যাতনকারীরা পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।’
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আমরা তাঁদের থানায় এনে বিস্তারিত শুনে মামলা নিয়েছি। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’