বাঘাইছড়ি (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম গন্ডাছড়া এলাকায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়ির উঠানে তলপেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয় শিশু রোমিও ত্রিপুরা (৭)। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১টা ৪৫ মিনিটে মারা যায় সে।
রোমিও ত্রিপুরার বাবা ফবেন ত্রিপুরা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেলে সোমবার রাত ১১টায় তাকে পিআইসিইউতে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। কিন্তু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিআইসিইউতে কোনো সিট খালি ছিল না। তাই সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ডেন্টাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক লাইফ সাপোর্ট লাগবে বলেন। কিন্তু ডেন্টাল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্ট না থাকায় এশিয়ান হাসপাতালে নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় রোমাও।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ফবেন ত্রিপুরা বলেন, ‘আমার সন্তানের মতো যেন আর কারও সন্তানের এমন করুণ মৃত্যু না হয়।’ পাহাড়ে এমন গোলাগুলি বন্ধেরও দাবি জানান তিনি।
বাঘাইছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার শিশু রোমিও ত্রিপুরার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং তার পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। আজ মঙ্গলবার সকালে শিশুটির পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেন ইউএনও।
উল্লেখ গত ১১ ফেব্রুয়ারি সাজেকের দুর্গম গন্ডাছড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি আঞ্চলিক দুই দলের গোলাগুলিতে রোমিও ত্রিপুরা আহত হয়। বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সাজেকের অস্থায়ী হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়। পরে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ ও খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের আর্থিক অনুদানে প্রায় ৩ মাস চট্টগ্রাম মেডিকেলে ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের তত্ত্বাবধানে রোমিও ত্রিপুরার চিকিৎসা চলে।