
তাঁরা তিন সহোদর। পেশায় কেউ দিনমজুর, কেউ রিকশাচালক। কিন্তু এগুলো আসল পেশা নয়। তাঁদের মূল পেশা চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মীরপুর গ্রামের এই তিন ভাই মো. মঈনুদ্দিন (৩২), মো. রহিম (৩০) ও ইব্রাহিম খলিলকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নগরীর কোতোয়ালিতে একটি দুর্ধর্ষ চুরির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ তাঁদের খোঁজ পায়। বাসা থেকে কয়েক লাখ টাকা, বিদেশি মুদ্রা, হিরা ও স্বর্ণ চুরি যাওয়ার ঘটনায় এক ব্যক্তি থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়েই তিন ভাইয়ের খোঁজ মেলে।
পুলিশ তিন ভাইয়ের সঙ্গে নারীসহ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই নারী তাঁদের একজনের স্ত্রী। অন্যজন হলেন চক্রটির সহযোগী সদস্য মো. জাহাঙ্গীর (৩০)। চাঁদপুর তেগুরা গ্রামের মৃত মজু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর পেশায় রিকশাচালক। আজ সোমবার তাঁদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানায় কোতোয়ালি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ১১ অক্টোবর রাত ১টার পর কোতোয়ালি থানাধীন জামালখান এসএস খালেদ রোডে এবিসি মাহাবুব হিলস নামে একটি ভবনের তৃতীয়তলার ফ্ল্যাটে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। চোরের দল জানালার গ্রিল কেটে বাসায় ঢুকে নগদ ৩ লাখ টাকা, ৩ হাজার ১০০ মার্কিন ডলার, ৩৫টি হিরার আংটি, হিরা বসানো চার জোড়া কানের দুল ও ৫টি স্বর্ণের ব্রেসলেট চুরি করে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়।
১৩ অক্টোবর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক বাবলু কুমার পাল কোতোয়ালির নাসিমন ভবনের সামনে থেকে ইব্রাহিম খলিলকে গ্রেপ্তার করে। ইব্রাহিমকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি ওই বাসায় চুরি করার বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। আপন তিন ভাইসহ চারজন চুরির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেন।
পুলিশ তাঁদের কাছ থেকে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা, ৭০০ ডলার, ১৫টি হিরার আংটি, চার জোড়া হিরা বসানো কানের দুল, হিরা বসানো একটি নথ, একটি স্বর্ণের চেইন, একটি ব্রেসলেট ও চুলের ক্লিপ উদ্ধার করেছে।
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. নেজাম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, মাঈনুদ্দিনকে কাজীর দেউড়ি, রহিমকে গোয়ালপাড়া ও জাহাঙ্গীরকে ব্যাটারি গলি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া চুরির মালামাল রাখার অভিযোগে মাঈনুদ্দিনের স্ত্রীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওসি নেজাম উদ্দিন আরও বলেন, আসামিরা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে চুরি করে থাকেন। এর আগে রিকশায় চড়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাসা-বাড়িগুলো তাঁরা টার্গেট করে রাখেন। মাঈনুদ্দিন চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধে কোতোয়ালি পুলিশের হাতে চারবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। রহিম একটি ডাকাতি চেষ্টার ঘটনায় চকবাজার থানা-পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া একটি ছিনতাইয়ের মামলায় আট বছর জেল খাটার পর কিছুদিন আগে জেল থেকে বেরিয়েছেন জাহাঙ্গীর।