Ajker Patrika
হোম > অপরাধ > চট্টগ্রাম

আসামিকে মাঝপথে ছেড়ে দেয় পুলিশ, এজাহারেও কাটছাঁটের অভিযোগ

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম

আসামিকে মাঝপথে ছেড়ে দেয় পুলিশ, এজাহারেও কাটছাঁটের অভিযোগ

চট্টগ্রামে এক ব্যবসায়ীকে মারধরে করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে ধরে নিয়ে মাঝপথে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনকি ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা নিতে গড়িমসি করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশে পরে ওই যুবককে আসামি করে থানা মামলা নিলেও এজাহারে আনা হয় কাটছাঁট। ব্যবসায়ী নিজে এই অভিযোগ তুলেছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

গত অক্টোবর মাসে পতেঙ্গা মডেল থানার চরপাড়া মোড় এলাকার একটি ঘটনায় এমন অভিযোগ উঠেছে সেখানকার ওসিসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন (৫৭) ওই থানারই বাসিন্দা। তিনি ২০২০ সালের আগস্টে মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা ও চারজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের করা মামলার বাদী।

অভিযোগের বিষয়ে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো অপরাধের ঘটনা ঘটলে পুলিশ আগে প্রাথমিক কিছু তদন্ত কার্যক্রম চালায়। পরে সত্যতা যাচাই করে এটা মামলা হিসেবে নেওয়া হয়। ওনার (জসিম উদ্দিন) ওপর হামলার ঘটনায় দেরিতে হলেও পরে আমরা মামলা হিসেবে নিয়েছি। উনি এসব অভিযোগ এখন কেন করছেন তা বুঝতে পারছি না। ওনার কোনো সমস্যা মনে হলে আমার কাছে পাঠিয়ে দেন।’

পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে মাঝপথে আসামি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে ওসি নাজমুন নুর দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা ওই দিন ঘটেনি। পুলিশ এ ধরনের কাজ কেন করতে যাবে?’

এর আগে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই বছর আগে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলাটি করার পর থেকেই তিনি বিভিন্ন সময়ে মৃত্যুর হুমকি পেয়ে আসছেন। অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দ্বারা বিভিন্ন সময়ে হুমকি, মারধর ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি নিছক একটি ঘটনা নিয়ে তাঁকে মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়। আসলে এগুলো আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই করা হচ্ছে।’

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, অভিযুক্ত যুবককে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত জসিম বলেন, ‘গত ৮ অক্টোবর বিকেলে আইপিএস কেনার উদ্দেশ্যে বাসার কাছেই এক মার্কেটে যান। কিছুক্ষণ পর সেখানে জাকির হোসেন নামে স্থানীয় এক যুবক নিছক একটি অজুহাত দেখিয়ে আমার শার্টের কলার ধরে টেনে-হিঁচড়ে একটি দোকানের ভেতরে নিয়ে মারধর করেন। এ সময় আমার পকেটে থাকা সাড়ে ৩৫ হাজার টাকা জোর করে ছিনিয়ে নেন। আশপাশে থাকা দোকানিরা সে সময় আমাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই মুহূর্তে আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে পুলিশ হামলাকারীকে ধরে থানায় নেওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়িতে তোলে। সেই সঙ্গে আমাকেও অভিযোগ দায়েরের জন্য থানায় যেতে বলে। পুলিশের কথামতো তাদের গাড়িতে উঠে থানার উদ্দেশে রওনা হই। কিছু দূর যাওয়ার পর কাটগড় গার্লস হাইস্কুল মোড়ের বিপরীতে একটি নির্জন জায়গায় পুলিশের গাড়িটি থামানো হয়। গাড়ি থেকে নেমে এসআই আকাশ মাহমুদ কার সঙ্গে জানি ফোনে কথা বলেন। পরে সেখানে দুটি মোটরসাইকেলে করে তিনজন অজ্ঞাত যুবক আসেন। ওদের মধ্যে কথাবার্তা হওয়ার পর তাঁরা আসামিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যান। পুলিশ তাঁদের কোনো বাধা দেয়নি। আমি বাধা দিলে তাঁদের একজন রড দিয়ে আমাকে আঘাত করে চলে যান। পুলিশের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তাঁরা কোনো কথা বলেননি। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে পরে থানায় যোগাযোগ করতে বলে চলে যান।

জসিম বলেন, চমেক হাসপাতালে পাঁচ দিন চিকিৎসা শেষে পরে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরি। এরপর আমার ওপর হামলার জন্য থানায় অভিযোগ দিতে তিন দিন ধরে ঘুরেও ওসিকে পাওয়া যায়নি। ১৬ অক্টোবর দুপুরে ওসি ফোন ধরার পর আমাকে কেইপিজেডে হোটেল এন্ডওয়ার্প নামে একটি আবাসিক হোটেলে আসতে বলেন। ওনার কথামতো আমি সেখানে যাই। আমাকে দেখামাত্র তিনি আমার কোনো অভিযোগ নেবেন না বলে জানান। একপর্যায়ে আমাকে বিভিন্ন মামলা দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে গালমন্দ করেন। কোনো উপায় না পেয়ে পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের দ্বারস্থ হই। ওনারা সবকিছু যাচাই-বাছাইয়ের পরে ওসিকে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে থানার ওসি হামলার ১৮ দিন পরে ১৯ অক্টোবর নিজেদের মনগড়া এজাহার তৈরি করে মামলা নেন।

জসিম আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন পুলিশের ফোন পেয়ে আমি থানায় যাই। কিন্তু সেখানে হামলার ঘটনার বিষয়ে আমার বক্তব্য উল্লেখ করে যে এজাহার দিয়েছিলাম, সেটা গ্রহণ না করে ওনাদের তৈরি এজাহারে আমাকে স্বাক্ষর দিতে বলেন। এর আগে থানায় ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হয়। পুলিশের গাড়িতে করে আসামিকে তুলে নিয়ে যাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধারসহ অনেক কিছুই ওই এজাহারে নেই। এ ছাড়া শাকিল নামে আরও একজনকে এই মামলায় আসামি করা হলেও পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে আসামি নিয়ে যাওয়া অজ্ঞাত সেই তিন যুবককে আসামি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’ এ বিষয়ে তিনি আইনি প্রতিকার পেতে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামি জামিনে রয়েছেন। এর আগে গত ২৫ অক্টোবর মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে জাকিরকে কারাগারে ও শাকিলকে জামিন দেন আদালত। গত বুধবার আদালতে আবেদন করে কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন জাকির।

সিএমপি পুলিশের বন্দর জোনের উপকমিশনার শাকিলা সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমার নলেজে নাই। থাকলে তখন অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম।’

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীর সংশ্লিষ্টতা: কুবির ২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা

‘পাহাড়খেকো’ জসিম তিন মামলায় গ্রেপ্তার

মিয়ানমারে পাচারকালে বিপুল পণ্যসহ আটক ২

প্লাস্টিক-পলিথিনের বিনিময়ে আলু, পেঁয়াজ, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য

বাঁশখালীতে কাদায় আটকে গেল দলছুট হাতি, ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় উদ্ধার

সেন্ট মার্টিনে জন্ম নেওয়া ৬৬৯টি কচ্ছপছানা সাগরে ফিরল

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়ক পরিচয়ে বাসায় ঢুকে দুজনকে অপহরণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৪

কোম্পানীগঞ্জে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু

নোয়াখালীতে চাঁদাবাজির অভিযোগে পদ হারালেন বিএনপির ৩ নেতা

অভয়াশ্রমে জাটকা শিকার, আটক ১১ জেলে