উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
মেজর সিনহা হত্যা মামলায় কম সাজা পাওয়া আসামিদের সাজা বৃদ্ধির জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করবে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের সংগঠন রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া)। অন্যদিকে রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছে সিনহার পরিবারের।
আজ শনিবার সকালে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের নিহত মেজর সিনহার বাসায় রায়-পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রাওয়ার প্রতিনিধিরা।
এর আগে সকাল ১০টায় রায়-পরবর্তী মেজর সিনহার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন রাওয়ার সাধারণ সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মো. কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম। তাঁরা মেজর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসহ পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। রায়-পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নিয়ে পরামর্শ করেন বলে জানান তাঁরা।
রাওয়ার সাধারণ সম্পাদক (অব.) লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল ইসলাম বলেন, রায় নিয়ে সবাই সন্তুষ্ট। তবে দ্রুত রায় কার্যকর দেখতে চায় মেজর সিনহার পরিবার।
কামরুল ইসলাম জানান, সিনহা হত্যার ষড়যন্ত্রে আর কারও ইন্ধন থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনার বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন তাঁরা। খুব শিগ্গিরই তাঁরা আপিল করবেন বলে জানান তিনি।
রাওয়ার সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আপিল করে কম সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা বৃদ্ধি, সেই সঙ্গে যারা সাজা পায়নি এবং আর কেউ জড়িত আছে কি না, সেই দিক বিবেচনা করে আপিল করবে রাওয়া। এই রায় শতভাগ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা হত্যার বহুল আলোচিত মামলায় গত সোমবার কক্সবাজারে জেলা ও দায়রা জজ আদালত পুলিশের বরখাস্ত হওয়া টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে ছয়জনের। মামলার অপর ৭ অভিযুক্তকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
কক্সবাজারে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এই হত্যাকাণ্ডকে 'পূর্বপরিকল্পিত' বলে মন্তব্য করেছেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জন হলেন বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, টেকনাফ থানার কনস্টেবল রুবেল শর্মা, এএসআই সাগর দেব, পুলিশের সাজানো মামলার সাক্ষী ও পুলিশের তিনজন সোর্স নুরুল আমিন, নেজাম উদ্দিন ও মো. আয়াজ। পক্ষান্তরে খালাস পেয়েছেন শামলাপুর চেকপোস্টের এপিবিএন সদস্য মো. শাহজাহান, মো. রাজিব ও মো. আবদুল্লাহ এবং কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ মামুন ও মো. লিটন মিয়া।
সিনহা হত্যা মামলা সম্পর্কিত আরও পড়ুন: