গাজীপুরের শ্রীপুরে স্বামী ও ভাশুর মিলে গৃহবধূকে মারধরের পর চুল কেটে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চাহিদামতো যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় এমন নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ ওই গৃহবধূ।
এ ঘটনায় আজ রোববার ভুক্তভোগী নববধূ ইতি আক্তার (১৯) বাদী হয়ে স্বামী, ভাশুর ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে ৫ জানুয়ারি উপজেলা বরমী ইউনিয়নের বরামা গ্রামের ডুলিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নববধূ ইতি আক্তার উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরামা গ্রামের মো. মামুন মিয়ার স্ত্রী এবং ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার বিরুনিয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে।
অন্য অভিযুক্তরা হলেন নববধূর স্বামী মো. মামুন মিয়া (২৬), ভাশুর মো. মাসুদ মিয়া (২৮) ও শ্বশুর গিয়াস উদ্দিন (৫৫)।
ভুক্তভোগী নববধূ ইতি আক্তার জানান, তিন মাস আগে অভিযুক্ত মামুনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁর বাবার বাড়ি থেকে সব আসবাব দেয়। বিয়ের এক মাস পর থেকে স্বামীসহ অন্য অভিযুক্তরা তাঁর বাবার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। এতে রাজি না হলে ৫ জানুয়ারি সকালে বাড়ির উঠানে ফেলে তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। একপর্যায়ে অভিযুক্তরা কাঁচি দিয়ে তাঁর মাথার চুল কেটে দেন। ঘটনার পরদিন ৬ জানুয়ারি অসুস্থতার কথা বলে স্থানীয় একটি কাজি অফিসে নিয়ে যান অভিযুক্তরা। সেখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০০ টাকা মূল্যের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একাধিক স্বাক্ষর নিয়ে গৃহবধূকে বাড়ি থেকে বের করে দেন তাঁরা।
ভুক্তভোগী নববধূর মা হাজেরা খাতুন বলেন, ‘আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে কাজি অফিসে নিয়ে যায় ওরা। ওই সময় আমাদের পক্ষের কোনো লোকজন ছিল না। ওদের ভয়ে আমরা মুখ খুলে কাজি অফিসে কিছু বলতে সাহস পাইনি। এরপর ওখান থেকে বের হয়ে থানায় চলে আসি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বামী মামুন মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বরমী ইউনিয়নের কাজি মহিউদ্দিন বলেন, ‘ছেলেমেয়ের অভিভাবকেরা একসঙ্গে এসে যৌথ তালাকনামায় স্বাক্ষর করেন। এরপর মারধর ও চুল কেটে নির্যাতনের কথা জানতে পেরে বিষয়টি আমি কাগজে-কলমে স্থগিত রেখেছি। ওই সময়ে মেয়ের স্বজনেরা আমাকে এসব বিষয়ে অবহিত করেনি।’
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় আইগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’