Ajker Patrika
হোম > অপরাধ > ঢাকা

জাবির মাদকবাহী অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় গর্ভের সন্তানের মৃত্যু: বিচারের দাবি পরিবারের

জাবি প্রতিনিধি

জাবির মাদকবাহী অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় গর্ভের সন্তানের মৃত্যু: বিচারের দাবি পরিবারের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদকবাহী অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর ঘটনার ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে পরিবার। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে গর্ভের সন্তান হারানো সেই নারীর ছোট ভাই ফরহাদ হোসেন এ দাবি জানান।

এ সময় তিনি এ ঘটনায় মামলা গ্রহণে গড়িমসি ও তথ্য গোপনের অভিযোগ করেন পুলিশের বিরুদ্ধে।

গত ২৬ জানুয়ারি (সোমবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) এলাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় অটোরিকশাচালক নিহত হন। আহত হন ওই অটোরিকশায় থাকা অন্তঃসত্ত্বা নারী, তাঁর স্বামী-সন্তান ও ভাতিজি। পরে সেই অন্তঃসত্ত্বা নারী তাঁর চার মাসের গর্ভের সন্তানকে হারান।

ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ওই রিকশায় আমার পরিবারের চারজন যাত্রী ছিলেন। তাঁরা হলেন—আমার বড় বোন কাকলি আক্তার (২৬), তাঁর স্বামী সবুজ আহমেদ (৩০), শোয়াইব (২) ও ভাতিজি জান্নাত (১৪)। তাঁরা সবাই সাভারের কলমার দোসাইদ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।’ 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কাকলি আক্তার সাভারের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে গর্ভকালীন নিয়মিত চেকআপ শেষ করে অটোরিকশাযোগে দোসাইদে তাঁদের ভাড়া বাসায় ফিরছিলেন। সাভারের লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনের ইউটার্নে মোড় নিয়ে কলমার সড়কে যাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সটি ওই অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় রিকশায় থাকা সকল আরোহী ছিটকে পড়ে যান। পরে সেখানেই রিকশাচালক আব্দুল কুদ্দুস (৩০) মারা যান।

ফরহাদ হোসেন দাবি করেন, এ ঘটনায় তাঁদের পরিবারের চিকিৎসা বাবদ এরই মধ্যে প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যা তাঁদের অবস্থাকে শোচনীয় করে তুলেছে। এমতাবস্থায় প্রশাসনের নিকট ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণে দাবি জানান তিনি।

ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ঘটনার পর স্থানীয়দের সহায়তায় আহত চারজনকে সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। জান্নাত ও শোয়াইবকে দুদিন পরেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ২৮ জানুয়ারি কাকলি আক্তার ও সবুজ আহমেদকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরদিন (২৯ জানুয়ারি) কাকলি আক্তারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সবুজ আহমেদকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ৩০ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেলে কাকলির গর্ভ থেকে মৃত সন্তান বের করা হয়।’

যোগাযোগ করা হলে সবুজ আহমেদ মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর একদিনের বেশি সময় আমার জ্ঞান ছিল। আমার দুই পায়ে রিং পরানো হয়েছে। দুই মাস পর আমার অপারেশন করা হবে বলে ডাক্তারেরা জানিয়েছে।’ তাঁর স্ত্রী কাকলি আক্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁর গর্ভের সন্তান মারাতো গেছেই, তাঁর মাথায় গভীর ক্ষত হয়েছে। কাকলির পা ভেঙে গেছে।’

এদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন ও অসহযোগিতার অভিযোগ করে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘মেডিকেল কলেজের চিকিৎসা শেষ করে গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সাভার মডেল থানায় যোগাযোগ করি। আমরা মামলা করার কথা বললে পুলিশ জানায়, তাঁরা বাদী হয়ে এরই মধ্যে একটি মামলা করেছে। পরে মামলার বাদী সাভার হাইওয়ে থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক রাসেল মাহমুদের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করি। তিনি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক বাবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। এরপর একটি মামলা করতে চাইলে বাবুল তাঁকে মামলা না করার পরামর্শ দেন।’

গত সোমবার রাত ৯টার দিকে বাবুল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন ফরহাদ। এ সময় বাবুল দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত অ্যাম্বুলেন্সের কোনো সন্ধান পাননি বলে ফরহাদকে জানান। ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও আমরা কোনো তথ্য পাইনি। সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করার কথা জানালে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঘটনাস্থলের দেড় কিলোমিটারের মধ্যে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। আমরা পরে সংবাদপত্রের মাধ্যমে অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়টি জানতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেছে এবং মামলা করতে চাইলে তাঁরা অসহযোগিতা করেছে। এই দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসা ব্যয় বহনের দাবি জানাই।’

এ বিষয়ে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা গতকাল মঙ্গলবার আহতদের সম্পর্কে জেনেছি। তাঁদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেছি। এর আগে তাঁরা থানায় যোগাযোগ করেছে কিনা আমার জানা নেই।’

সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, ‘একই ঘটনায় দুটি মামলা হয় না। তাই আমরা তাঁদের মামলা নিতে পারছি না। তবে তাঁরা চাইলে আমাদের কাছে অভিযোগ করতে পারে, আমরা সেটি মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে দেব। এর বাইরে গিয়ে তাঁরা চাইলে কোর্টে আলাদা করে মামলা করতে পারে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্সটি চালাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চালক রিপন হাওলাদার। অ্যাম্বুলেন্সটিতে আরোহী ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক রিফাত চৌধুরী ও উপ অর্থসম্পাদক আহসান হাবিব ইমন। দুজনই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত। গত ২৭ জানুয়ারি মওলানা ভাসানী হলের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান হয়। সেই অনুষ্ঠানেই মাদক পরিবহনে ব্যবহার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স।

এর আগে গত শনিবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সে মদ নিয়ে যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থীসহ চারজনকে আটক করে বংশাল থানা-পুলিশ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের ছাড়িয়ে নেয়। জাবির ৪৩ তম ব্যাচের ‘শিক্ষা সমাপনী দিবস’ উদযাপনের জন্য এই মদ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন ওই ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

বিক্ষোভের ডাক হিজবুত তাহরীরের, তাদের সব কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলল পুলিশ সদর দপ্তর

সিদ্ধিরগঞ্জে লেকের পানিতে ভাসছিল যুবকের মরদেহ

নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের তিন সদস্য গ্রেপ্তার

দাগি অপরাধী গ্রেপ্তার নেই, উদ্ধার বেশি রড-লাঠি

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ছেলের মৃত্যু টাকার লোভে আন্দোলনে হত্যার মামলা বাবার

আমন সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার ১০ শতাংশের কম

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

ইফতার ঘিরে মিলনমেলা

আতঙ্কের নাম গ্যাস বিস্ফোরণ

ঢাবি ছাত্রীকে হেনস্তাকারীর জামিনে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা, চাকরিতে বহাল করলে ক্লাস বর্জনের হুঁশিয়ারি