রাজবাড়ীর কালুখালীতে স্কুলশিক্ষককে হাতুড়িপেটা ও কুপিয়ে জখম করার অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি জিল্লু বিশ্বাসকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে কালুখালী থানা-পুলিশ। জিল্লু বিশ্বাস উপজেলার মাঝবাড়ী ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা।
গত বৃহস্পতিবার সকালে সোনাপুর মোড়ে কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ী ইউনিয়নে মাঝবাড়ী হুরুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামানের (৫৭) ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। আক্তারুজ্জামানের বাড়ি একই ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামে।
স্কুলশিক্ষক আক্তারুজ্জামানের অভিযোগ, গত ইউপি নির্বাচনের জেরে এই হামলা চালানো হয়েছে। হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার একই ইউনিয়নের জিল্লু বিশ্বাস ও মো. কামরুল শেখের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। জিল্লু বিশ্বাস ও মো. কামরুল শেখ মাঝবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি নির্বাচনের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউসুফ হোসেনের ঘনিষ্ঠ।
ভুক্তভোগী শিক্ষক বলেন, ‘আমি ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি। আমার পরিবারও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে সরকারি বিদ্যালয়ে চাকরি হওয়ার পর থেকে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি না করলেও নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোট দেই। বিগত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি। তাঁর পক্ষে এলাকায় কাজ করেছি।
আক্তারুজ্জামান আরও বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী ইউসুফ হোসেনের ছেলে সোহেল এবং জিল্লু আমাকে এই ঘটনার আগে একাধিকবার হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন অনেক দিন হয়ে যাওয়ায় এসব ভুলে গিয়েছিলাম।
আক্তারুজ্জামান হামলার বর্ণনা দিয়ে বলেন, তিনি বৃহস্পতিবার সকালে মোটরসাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পথে সোনাপুর মোড়ে থেমে একজনকে টাকা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় জিল্লু বিশ্বাস ও মো. কামরুল এসে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁর পায়ে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আঘাত করেন হামলাকারীরা। পরে তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যান হামলাকারীরা।
সে সময় হামলাকারীরা তাঁর কাছে থাকা ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, ‘ঘটনার দিন থানায় মামলা করা হয়। মামলার পর থেকে আসামিরা পলাতক ছিলেন। গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’