কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থী তানভীর খান রিয়াদ (১৮) হত্যাকাণ্ডের ঘটনার আসামী মো. রবিউল আলম (২০) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবার আদালতে এ স্বীকারোক্তি দেন তিনি। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকার কালশী মোড়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার মো. রবিউল আলম হোসেনপুর উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের বীর হাজিপুর গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। সে রিয়াদ হত্যাকাণ্ডের মূল ঘাতক এবং মামলার ৭ নং আসামি।
অন্যদিকে নিহত তানভীর খান রিয়াদ বীর হাজিপুর গ্রামের মো. স্বপন খানের ছেলে। সে উপজেলার হোসেনপুর সরকারি মডেল পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পেশায় সে একজন অটো রিকশা চালক।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রবিউলের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে তিনি জানান, রিয়াদের চাচাতো বোন লাবনী আক্তারের একই গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহমান দুখুর সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম ওরফে মনুসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন লাবনীকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করতো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। এ পরিস্থিতিতে গত ২৮ মে রাত ১২টার দিকে চাচা মো. স্বপন খান লাবনীর শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে গেলে তারা স্বপন খানের ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট শুরু করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, স্বপন খানের ছেলে তানভীর খান রিয়াদ বাবার ওপর হামলার প্রতিবাদ জানালে হামলাকারীরা তার ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে লাবনীর দেবর রবিউল আলম ক্ষিপ্ত হয়ে রিয়াদকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে রিয়াদ লুটিয়ে পড়লে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় স্বজনেরা উদ্ধার করে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহফুজা আক্তার মিষ্টি মৃত ঘোষণা করেন।
মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন জানান, এ ঘটনায় নিহত তানভীর খান রিয়াদের বাবা মো. স্বপন খান বাদী হয়ে মো. রবিউল আলমসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৮ / ১০ জনকে আসামি করে গত ৩০শে মে হোসেনপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় রবিউলকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।