ফরিদপুরের নগরকান্দায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের শরীরে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরকান্দা-ছাগলদী সড়কের পৌরসভার মিনারগ্রামের পরিত্যক্ত ইটভাটার পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম বাবু মোল্যা (৩৫)। তিনি একজন ব্যবসায়ী। উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের চর ছাগলদী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জিলু মোল্যার ছেলে। বাবুর স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
জানা গেছে, বাবু মোল্যা নগরকান্দা সদর বাজারে হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করতেন। প্রতিদিনের ন্যায় দোকান বন্ধ করে নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মিনারগ্রামের এমো মিয়ার পরিত্যক্ত ইটভাটার কাছে পৌঁছালে আগে থেকে ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাঁর গতি রোধ করে। পরে হাত-পা ও মুখ বেঁধে শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে দেয়। পরে হাত ও পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।
এরপর পথচারীরা দেখতে পেয়ে স্বজনদের সংবাদ দেয়। পরিবারের সদস্যরা বাবুকে উদ্ধার করে নগরকান্দা হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকায় নেওয়ার পথে মানিকগঞ্জে পৌঁছালে বাবু মোল্যা মারা যান। তবে মৃত্যুর আগে তিনি হামলাকারীদের নাম বলে গেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
নিহত বাবু মোল্যার ভাই ফিরোজ মোল্যা বলেন, ‘আমার চাচাতো ভাই আমির মোল্যার সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ জমিজমা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। সেই আক্রোশে ওরাই আমার ভাইকে খুন করেছে। আমি ওদের বিচার চাই।’
এ ঘটনায় নিহত বাবু মোল্যার স্ত্রী তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
নগরকান্দা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সোহেল বলেন, নিহত বাবু একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমরা এর নৃশংস হত্যার বিচারের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ আজ রোববার বিকেলে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করব।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিল হোসেন বলেন, ঘটনা ঘটিয়েই আসামিরা পালিয়ে গেছে। ওদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।