হোম > সারা দেশ > ঢাকা

‘প্রথম এত শান্তিতে বাড়ি যাচ্ছি, এটা অন্য রকম এক ঈদযাত্রা’

আবদুল্লাহ আল গালিব, ঢাকা

এ বছর গাবতলী বাস টার্মিনালে নেই চিরাচরিত ঘরমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঈদযাত্রা মানেই ঘরমুখী মানুষের স্রোত, দীর্ঘ যানজট, বাসের টিকিটের জন্য যুদ্ধ, অতিরিক্ত ভাড়া আর নানামুখী ভোগান্তি। কিন্তু এবার যেন চিত্র কিছুটা ব্যতিক্রম। গাবতলী বাস টার্মিনালে পরিবারসহ বাসের জন্য অপেক্ষমাণ রুবাইয়া সুলতানা বলছিলেন, ‘আজ ছয় বছর ধরে পরিবারসহ ঢাকায় আছি, এবার প্রথম এত শান্তিতে বাড়ি যাচ্ছি। এটা অন্য রকম ঈদযাত্রা।’

আজ শনিবার গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনালে সরেজমিন দেখা গেছে, বিগত কয়েক দিনের তুলনায় যাত্রীদের চাপ কম। বাসের সংকট নেই, দুই থেকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করে তাৎক্ষণিক টিকিটও পাওয়া যাচ্ছে। তবে কিছু পরিবহন নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া নিচ্ছে এ ক্ষেত্রে। বাস ছাড়ার সময়সূচি মোটামুটি ঠিক থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে দেরি হয়েছে। অন্যদিকে, অন্যান্য বছরের মতো এবার ট্রাক বা মাইক্রোবাসে যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়নি, যা এবারের ঈদযাত্রার অন্যতম বড় পরিবর্তন। এ ছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহাসড়কের কোথাও কোথাও সাময়িক যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, তবে তা দীর্ঘসময় থাকছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি ও ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে অন্যান্য বছরের তুলনায় স্বস্তির ঈদযাত্রা দেখা গেছে।

গাবতলী বাস টার্মিনাল

গাবতলীর সাকুরা পরিবহনের কাউন্টারে কথা বলে জানা গেছে, যাত্রীসংখ্যা কম থাকায় বাস সংকট নেই। গোল্ডেন লাইন পরিবহনের ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান অপু জানান, পাঁচটি কাউন্টারের মধ্যে চারটি চালু রয়েছে। কারণ, শুক্রবারের তুলনায় শনিবার যাত্রী কম।

সোহাগ পরিবহনের কর্মকর্তা মইনুদ্দিন বলেন, ‘ঈদের লম্বা ছুটির কারণে অনেকে আগেভাগেই রওনা হয়েছেন, তাই এখন চাপ কম। তবে তাৎক্ষণিক টিকিটের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে কিছু যাত্রীকে।’

মাহফুজুর রহমান যাচ্ছিলেন যশোর। তিনি বলেন, ‘টিকিট আগেই নিয়ে নিয়েছিলাম, তাই আর কোনো সমস্যায় পড়িনি। কিছুক্ষণ পর বাস আসবে। কাউন্টার থেকে বলা হয়েছে নির্দিষ্ট সময়েই আসবে।’ টিকিটের দামের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত দামেই কিনছি।’

তবে কেউ কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগও করেছেন। গাবতলী থেকে ঝিনাইদহগামী দুই বন্ধু সজীব ও তিতাস জানান, ৫৫০ টাকার টিকিট তাঁদের ৭৫০ টাকায় কিনতে হয়েছে।

সাতক্ষীরাগামী এ কে ট্রাভেলসের তাৎক্ষণিক টিকিট ৯২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৪০০ টাকা বেশি। আসিফ ও মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘সাড়ে ৯টায় এসে সাড়ে ১২টার টিকিট পেয়েছি, কিন্তু প্রতি টিকিটের জন্য ৪০০ টাকা বেশি গুনতে হয়েছে।’

এ বছর গাবতলী বাস টার্মিনালে নেই চিরাচরিত ঘরমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (মিরপুর) মাকসুদুর রহমান সার্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা এখনো কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হইনি। আমাদের পর্যাপ্ত লোকবল মোতায়েন করা হয়েছে। মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করছে। সবাই সুন্দরভাবে যার যার গন্তব্যে যেতে পারছেন।’

মহাখালী বাস টার্মিনাল

মহাখালী বাস টার্মিনালেও একই চিত্র দেখা গেছে। নিয়মিত সময়ের চেয়ে কম যাত্রী আজ। যাঁরা আসছেন, সকলেই টিকিট পাচ্ছেন।

ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-আশুগঞ্জ অভিমুখী লাবিবা ক্ল্যাসিক বাসের কাউন্টার ম্যানেজার আলী হোসেন বলেন, ‘আজ খুব একটা যাত্রীর চাপ নেই, লম্বা ছুটির কারণে অনেকে আগেই আস্তে আস্তে চলে গেছেন। যাত্রীদের চাহিদামতো বাস দেওয়া যাচ্ছে, প্রায় নির্দিষ্ট সময়েই বাস ছাড়া হচ্ছে। দুই একটা ট্রিপ জ্যামের কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।’

এ বছর গাবতলী বাস টার্মিনালে নেই চিরাচরিত ঘরমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহ অভিমুখী ইউনাইটেড এক্সপ্রেসের কাউন্টারে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ যাত্রীর চাপ তুলনামূলক কম। যাঁরা আসছেন সবাইকেই টিকিট দেওয়া যাচ্ছে। তবে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে কয়েক জায়গায় যানজট থাকার ফলে গাড়িগুলো আসতে দেরি হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না।

কিশোরগঞ্জ যাচ্ছিলেন শেখ শাহরিয়ার। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় সহজ হয়েছে, তবে জ্যামের কারণে গাড়ি আসতে বিলম্ব হচ্ছে। এটা ছাড়া অন্য কোনো হয়নির সম্মুখীন হতে হয়নি। পূর্বের দামেই টিকিট নিয়েছি।’

তবে এসি বাসের সংকটের অভিযোগ করেছেন আল আমিন একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি বেলা ১১টায় মহাখালী বাস টার্মিনালে এসেছিলেন। বেলা ১টার দিকে কথা হলে তিনি জানান, এখনো টিকিট হাতে পাননি। তিনি বলেন, ‘আমি ময়মনসিংহের এসি বাসের টিকিট নেওয়ার চেষ্টা করেছি, তবে বাস সংকট থাকার কারণে এখনো টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। নন-এসির টিকিট দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু আমি নন-এসিতে যাব না।’

তবে অন্যান্য বছরের মতো এবার মাইক্রোবাসে যাত্রীর চাপ নেই। ট্রাক কিংবা অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ বাহনে কাউকে ঘরে ফিরতে দেখা যায়নি। মাইক্রোবাসচালক মো. সিরাজের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘এবার একদমই ট্রিপ নেই। যাত্রীরা সবাই বাসেই যাচ্ছেন। অন্যান্য বছর এই সময়ে দম ফেলার সময় পেতাম না, আর এবার এখানে সকাল থেকে এখন ১১টা বাজে। এখনো কোনো ট্রিপ পাইনি।’

মহাসড়কের কিছু স্থানে যানজট থাকলেও ট্রাফিক পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গাবতলী ও মহাখালী টার্মিনালে নিরাপত্তাব্যবস্থা সন্তোষজনক ছিল। যাত্রীদের পক্ষ থেকে কোনো হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

ঈদে আতশবাজি ফোটানো নিয়ে ঝগড়া: রাজৈরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২৫

শ্রীপুরে ঘরে ঝুলছিল নারী পোশাককর্মীর লাশ, পাশে ‘প্রেমিক’কে লেখা চিরকুট

আবাদি জমি-জলাশয় ভরাট করে আবাসন

সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন মেঘনার সহযোগী সমির, পুলিশের প্রতিবেদন

ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ঢাকার গণজোয়ার

আট মাসের পরিচয়, চার মাসে ‘বাগদান’

সৌদি রাষ্ট্রদূত নিয়ে ভিন্ন কথা বলছে মডেল মেঘনার পরিবার

মেঘনা আলমের সহযোগী সমির ৫ দিনের রিমান্ডে

পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন উপলক্ষে ট্রাফিক নির্দেশনা দিল ডিএমপি

৯ টুকরো লাশ: সবুজকে হেমায়েতপুর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন পলাশ-তৃষা