রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলায় প্রাণহানির মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আগামী ২১ মে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দা এই তারিখ ধার্য করেন। আজ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মজিবুর রহমান প্রতিবেদন দাখিল না করায় আদালত নতুন তারিখ ধার্য করেন।
রাজধানীর গুলিস্তানে বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির নাম কুইন টাওয়ার। গত ৭ মার্চ বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের নর্থসাউথ রোডে সাততলা ওই ভবনে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়।
বিস্ফোরণে ভবনটির তিনতলা পর্যন্ত পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানে স্যানিটারি ও গৃহস্থালি সামগ্রীর বেশ কয়েকটি দোকান ছিল। বিস্ফোরণে ভবনটির দেয়াল ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি ভেতরের জিনিসপত্র ছিটকে বাইরে পড়ে যায়। ভবনের উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাশের কয়েকটি ভবনও।
এ ঘটনায় একদিন পর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি অপ মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়। পরে দায়িত্বে অবহেলার জন্য সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় বংশাল থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করে পুলিশ।
মামলায় বলা হয়, বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি যথাযথ নিয়ম মেনে (বিল্ডিং কোড) নির্মাণ করা হয়নি। ভবনটিতে আন্ডারগ্রাউন্ড/বেসমেন্ট তৈরির অনুমোদন ছিল না। অবৈধভাবে নির্মিত এই বেসমেন্ট বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের অনুমতি ছিল না। সেখানে নির্মাণ সামগ্রী মজুত ও বিক্রয় কাজে ব্যবহার করা হতো। বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে কুইন্স ক্যাফে নামে রান্নাঘর করা হয়েছিল। অথচ গ্যাস লিকেজ সমস্যা ও পয়োবর্জ্যে সৃষ্ট গ্যাস নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ছিল না। ভবন মালিক ও ব্যবহারকারীরা অর্থের লোভে অবৈধভাবে বেসমেন্ট ও আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যবহার করে আসছিলেন। এমন অপরাধজনক কাজের জন্য এতগুলো প্রাণহানি ও মালামাল ধ্বংস হয়েছে।
ঘটনার পরে ভবনের দুই মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও তাঁর ভাই মতিউর রহমান এবং ভবনের বেসমেন্টের স্যানিটারি ব্যবসায়ী মিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়।