রাজধানীর বনানী-বারিধারা-গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক কারবারি চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তারের সূত্র ধরে চক্রের মূল হোতা চন্দন রায়ের (২৬) সন্ধান পায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে রাজধানীর ওয়ারী থানার হাটখোলা রোড এলাকার গ্রিন জোন টাওয়ার ৫০০ গ্রাম আইসসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লালবাগ সার্কেলের পরিদর্শক মো. মোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম মাদকসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ডেমরায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোর (দক্ষিণ) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্লাহ কাজল।
জাফরুল্লাহ কাজল জানান, তথ্যের ভিত্তিতে তাঁদের কয়েক মাস পর্যবেক্ষণ করছিল একটি গোয়েন্দা দল। এর আগেও ২০২০ সালে লাগেজ পার্টির ব্যবসা করতে গিয়ে ধরা পরে জেল খাটেন চন্দন। পরে অল্পদিনে বেশি টাকা আয়ের লোভে মাদক কারবারি শুরু করেন তিনি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চন্দনের বরাত দিয়ে জাফরুল্লাহ কাজল আরও জানান, তিনি ডিগ্রি পাস করে কেমিক্যাল কোম্পানিতে চাকরিরত অবস্থায় চোরাকারবারি চক্রের সঙ্গে জড়িয় যায়। একটা সময় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমায়। সেখানে তার আত্মীয় শংকর বিশ্বাস ও পূর্বপরিচিত নোয়াখালীর বাসিন্দা হাবিবের মাধ্যমে ক্রিস্টাল আইস পাচারের চক্র গড়ে তোলেন চন্দন।
এর আগেও ২০২২ সালে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) রমনা বিভাগের হাতে ৬০০ গ্রাম আইস নিয়ে চন্দনসহ পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছিল। বাংলাদেশে ক্রিস্টাল মেথ সহজলভ্য না। তবে অপ্রচলিত এই মাদকের অনেক চাহিদা রয়েছে অভিজাত এলাকায়। অভিজাত এলাকার তরুণদের মধ্যে মূলত তিনি বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করে মাদক সরবরাহ করত।
অত্যন্ত উচ্চমূল্যের মাদক আইসের প্রতি গ্রামের দাম সেবনকারী পর্যায়ে পাঁচ হাজার টাকা। টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় আসতে প্রতি কেজির মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছে, ভয়ংকর এই মাদকের প্রভাবে মস্তিষ্কের রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রক্তক্ষরণ হতে পারে। হৃদ্যন্ত্র, কিডনি, লিভারে অল্প সময়ের মধ্যে ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে। এ ছাড়া বিকৃত যৌনাচারসহ কোন কোন ক্ষেত্রে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়।
গ্রেপ্তারকৃত চন্দন রায় (২৬) এর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ওয়ারী থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান। এ ছাড়া চক্রের অন্য সদস্যদের আটক করতে অভিযান চলমান আছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।