কুমিল্লার মুরাদনগরের জামালউদ্দিন কাজ করেন মিরপুরের একটি কারখানায়। এক ছেলে ও এক মেয়ের সংসার তাঁর। থাকেন পশ্চিম শান্তিবাগে ভাড়া বাসায়। ছেলেটা এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। মেয়ে বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থী। গতকাল অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে মেয়ে সামিয়া আফরান জামাল প্রীতি (২২) নিহতের ঘটনায় নিজেদের ভাগ্যকে দুষছেন বাবা-মা। তাঁরা বলছেন, এখানে কারোরই কোনো দোষ নেই। বিচার যা হবে সেটা আল্লাহ করবেন।
আজ শুক্রবার সামিয়া আফরান জামাল প্রীতির বাবা জামালউদ্দিন ও মা হোসনে আরা বেগম ও তার বান্ধবী সুমাইয়ার সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার।
মা হোসনে আরা বলেন, কয়েক দিন ধরে তাঁদের মেয়ে খিলগাঁও তিলপাপাড়ায় বান্ধবী সুমাইয়ার বাসায় থাকছেন। সেখান থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাসায় ফিরছিলেন। কিন্তু বাসায় চট্টগ্রাম থেকে তাঁর মামা-মামি এসেছেন। তাই প্রীতিকে ফোন করে বলেছেন আজও যেন সে বান্ধবীর বাসায় থেকে যায়। বাসার কাছাকাছি এসেও মায়ের ফোন পেয়ে বান্ধবী সুমাইয়ার বাসায় ফিরে যাচ্ছিলেন।
বান্ধবী সুমাইয়া বলেন, ‘উত্তর শাহজাহানপুরের আমতলা থেকে প্রীতি তাঁকে ফোন করেন। একটু পর তিনি প্রীতির কাছে আসেন। পরে তাঁরা খিলগাঁও তিলপাপাড়ায় যাওয়ার জন্য রিকশা নেন। রিকশায় ওঠার পরপরই হঠাৎ তাঁরা শব্দ শুনতে পান। দুজনই রিকশা থেকে পড়ে যান। পরে তিনি দেখতে পান প্রীতির শরীর থেকে রক্ত ঝরছে।
প্রীতির বাবা জামালউদ্দিন বলেন, এখানে তিনি কাউকে দোষ দিতে চান না। তার মেয়ে পথচারী। ভাগ্য ছাড়া অন্য কেউ দায়ী নন। তবে তিনি বলেন, দেশে অনেক জায়গাতেই সুস্থ পরিবেশ নেই। থাকলে এমন হতো না।
জানা যায়, রাজধানীর বদরুন্নেসা সরকারি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন প্রীতি। ফল খারাপ হওয়ায় আবার পরীক্ষার দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে জাহিদুল মাইক্রোবাসে করে বাসায় ফিরছিলেন। শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে জাহিদুল ও তাঁর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় জাহিদুলের গাড়ির পাশ দিয়ে রিকশাযোগে যাওয়া শিক্ষার্থী প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হন। পরে তিনজনকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহিদুল ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন।