সীমা হায়দার। প্রেমিককে বিয়ে করতে স্বামী–সংসার ছেড়ে পাকিস্তান থেকে ভারতে এসে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আদালত তাঁকে মুক্তি দিয়েছে। সীমা ও তাঁর ভারতীয় প্রেমিক শচীন এখন বিয়ে করতে যাচ্ছেন।
কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয়নি বাংলাদেশি তরুণী শাপলা আক্তারের। তিনিও সীমার মতো অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় প্রেমিকের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ঠাঁই হলো জেলখানায়।
শাপলা আক্তার (২১) জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধপথে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে চলে যান। সেখানে গিয়েই দেখতে পান ভারতীয় সেই প্রেমিকের আসল রূপ! সেই প্রেমিক তাঁকে নেপালে বেচে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় আড়াই মাস আগে অবৈধপথে ভারতে প্রবেশ করেন শাপলা আক্তার। এরপর শিলিগুড়ির সেই প্রেমিকের সঙ্গে বলতে গেলে সুখেই দিন কাটছিল। কিন্তু এর মধ্যে কোনোভাবে জানতে পারেন প্রেমিক তাঁকে নেপালে বিক্রি করে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে।
প্রেমিকের আসল উদ্দেশ্য জানার সঙ্গে সঙ্গে শাপলা কৌশলে তার কাছ থেকে পালিয়ে যান। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শাপলাকে উদভ্রান্তের মতো ঘোরাফেরা করতে দেখে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তিনি শিলিগুড়ি রেলজংশনে একটি ট্রেনে চড়ার চেষ্টা করছিলেন।
সেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। প্রধাননগর পুলিশ স্টেশনে তাঁকে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ তাঁকে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত মঙ্গলবার শিলিগুড়ি আদালতে উপস্থাপন করে। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
শাপলা আক্তারের অভিযুক্ত ভারতীয় প্রেমিককে এখন খুঁজছে শিলিগুড়ি পুলিশ।
উল্লেখ্য, অনলাইনে পাবজি গেম খেলতে গিয়ে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বাসিন্দা সীমা হায়দারের সঙ্গে পরিচয় হয় উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দা শচীন মিনার। শচীনের ভালোবাসার টানে চার সন্তানকে নিয়ে প্রথমে নেপালে প্রবেশ করেন সীমা হায়দার। সঙ্গে তাঁর চার সন্তানও রয়েছে। সেখানে শচীনকে বিয়ে করেন। এরপর গত ১৩ মে অবৈধভাবে ভারতে চলে আসেন। শচীনের সঙ্গে কয়েক দিন থাকার পর স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে আটক করে। কিন্তু সব শুনে গত ৭ জুলাই আদালত তাঁকে মুক্তি দিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সীমা হায়দার এখন ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন। সন্তানদের নামও বদলে রেখেছেন—রাজ, প্রিয়াঙ্কা, পরী এবং মুন্নি। শিগগিরই তাঁরা হিন্দু রীতিতে বিয়ে করবেন।
ওদিকে পাকিস্তান সীমা হায়দারের স্বামী গোলাম হায়দার চার সন্তানকে ফেরত পেতে ভারত ও পাকিস্তান সরকারের কাছে আবেদন করেছেন।