নড়াইলের কালিয়ায় নববধূকে পিটিয়ে হত্যার পর হাসপাতালে মরদেহ ফেলে যাওয়া ঘাতক স্বামী মো. হাসিবুর রহমান বিশ্বাসকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে থানা-পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় হাসিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি উপজেলার যাদবপুর গ্রামের হেমায়েত বিশ্বাসের ছেলে।
জানা যায়, কালিয়া থানা-পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে ঢাকার একটি বাসা থেকে গতকাল সন্ধ্যায় হাসিবুর রহমানকে গ্রেপ্তারের পর আজ সকালে কালিয়া থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩ মাস আগে হাসিবুর রহমানের সঙ্গে খুলনার তেরখাদা উপজেলার হাড়িখালী গ্রামের মো. ফারুক শেখের মেয়ে শ্রাবণীর বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিন পরেই চাকরির অজুহাতে শ্রাবণীর কৃষক বাবার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন হাসিবুর। মেয়ের সুখের কথা ভেবে শ্রাবণীর বাবা জামাইকে ৩ লাখ টাকা দেন। বাকি ৭ লাখ টাকার জন্য এক মাসের সময় নেন। কিন্তু সময় মতো যৌতুকের বাকি টাকা দিতে না পারায় গত ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসিবুর শ্রাবণীকে বেধড়ক মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে শ্রাবণী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অজ্ঞান অবস্থায় তাঁকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শ্রাবণীকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় স্ত্রীর মরদেহ হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যান ঘাতক স্বামীসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।
এই ঘটনায় শ্রাবণীর বাবা ফারুক শেখ বাদী হয়ে গত ৩ জানুয়ারি ঘাতক স্বামী হাসিবুরসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৪ / ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দায়েরের পর প্রধান আসামি হাসিবুরকে গ্রেপ্তার করার জন্য কালিয়া থানা-পুলিশের একাধিক টিম অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে গত বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকার একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ সকালে তাঁকে কালিয়া থানায় নিয়ে আসা হয়।
এ বিষয়ে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কনি মিয়া বলেন, কিশোরী নববধূ শ্রাবণী হত্যা মামলার প্রধান আসামি হাসিবুরকে ঢাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত জানতে তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনসহ আদলতে পাঠানো হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, বাকি পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।