যশোর প্রতিনিধি
যশোরে পরকীয়ার জেরে ফাহিমা নামের এক গৃহবধূকে হত্যা করেছেন তাঁর স্বামী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে যশোর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদী হাসানের আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এসব কথা জানান স্বামী জাহাঙ্গীর মোড়ল।
এর আগে শুক্রবার সকালে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সাতপাকিয়া গ্রাম থেকে জাহাঙ্গীর মোড়লকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ফাহিমা সাতক্ষীরার তালা উপজেলার চরগ্রামের মৃত আনসার আলীর মেয়ে। অন্যদিকে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর মোড়ল একই উপজেলার সাতপাকিয়া গ্রামের দাউদ মোড়লের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর মোড়লের সঙ্গে ২১ বছর আগে বিয়ে হয় ফাহিমার। তাঁদের ১৮ ও ১১ বছরের দুটি মেয়ে রয়েছে। স্বামী-স্ত্রী উভয়েই ইটভাটাতে কাজ করতেন। সাতপাকিয়া গ্রামের ইসমাইল সরদারের দলে যুক্ত হয়ে গত ১ ডিসেম্বর তাঁরা যশোর সদরের নরেন্দ্রপুরের দফাদার ইটভাটায় কাজ নেন।
ফাহিমা এ সময় স্বামীকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দিতেন। পরে তিনি ঘুমিয়ে পড়লে ভাটার অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হতেন। বিষয়টি স্বামী জাহাঙ্গীর মোড়ল টের পেয়ে যান। পরে এ ব্যাপারে ফাহিমাকে একাধিকবার নিষেধ করা হয়। কিন্তু তিনি কর্ণপাত না করে অবৈধ মেলামেশা অব্যাহত রাখেন। এ নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত।
গত বৃহস্পতিবার সকালে নরেন্দ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টয়লেটের সেফটি ট্যাংক থেকে ফাহিমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ভাই শরিফুল ইসলাম এসে মরদেহ শনাক্ত করেন। তবে কবে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, তা জানায়নি পুলিশ।
শরিফুল ইসলাম শেখ জানান, ১৫ ডিসেম্বর বিকেলের পর থেকে ফাহিমার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্নভাবে খোঁজাখুঁজি করে কোনো সন্ধান না পেয়ে তিনি তালা থানায় জিডিও করেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার তিনি ফাইমার মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারেন।
জাহাঙ্গীর মোড়লের উদ্ধৃতি দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম আলী জানান, পরকীয়ার জেরে ফাহিমাকে হত্যার পর তাঁর মরদেহ সেফটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। পরে দুর্গন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন।