স্বামী প্রবাসে থাকেন। এদিকে স্ত্রী জেসমিন খাতুন আয়নার সঙ্গে পরকীয়া প্রেম হয় স্থানীয় মামুন মণ্ডলের। তবে মামুনের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ও স্বামীর দেশে ফেরার সময় ঘনিয়ে আসায় ক্ষুব্ধ হয়ে আয়নাকে হত্যা করে মামুন। ৭ সেপ্টেম্বর আয়না হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানায়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক বলেন, জেসমিন খাতুন আয়নার স্বামী কুয়েত প্রবাসী হওয়ার সুবাদে তাঁর সঙ্গে প্রতিবেশী তরুণ মামুন মণ্ডলের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের দাবিতে মামুন আয়নাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আয়না খাতুন বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে বিবাদ হয়। এর মধ্যে প্রবাসী স্বামী হাবিবুর রহমানের দেশে ফেরার খবরে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মামুন মণ্ডল। পরে ভাগ্নে রাব্বিকে ব্যবহার করে শরবতের মধ্যে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে আয়নাকে পান করায় মামুন। এতে আয়না জ্ঞান হারালে ওই দিন রাতে ঘরে ঢুকে ড্রেসিং টেবিলের ওপরে থাকা একটি ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে মামুন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, মরদেহটি বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে ছিল। এ থেকে আমাদের সন্দেহ, ওই নারীকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হতে পারে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন শেষে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘটনার পর থেকেই মাঠে নামে পুলিশ। একদিনের মধ্যেই হত্যার রহস্য অনেকটা উদ্ঘাটন করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বেশ কিছু আলামতও জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি, চেতনানাশক ওষুধ মেশানো পানির গ্লাস, রক্তমাখা কাপড়, মোবাইল ফোন, ঘাতকের স্যান্ডেল ও লুঙ্গি।
প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নতুন যাবদপুর গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে গতকাল রাতে নিহতের ভাই আব্দুর রউফ বাদী হয়ে বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।