বিয়ের আট মাসের মাথায় লাশ হলেন নন্দিতা সরকার (১৮)। অভিযোগ নন্দিতার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। কবিতা সরকার ও নিতাই সরকার দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা নন্দিতা ছিলেন এসএসসি পরীক্ষার্থী। মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এর মধ্যে তাঁকে বিয়ে দিয়ে দেন তাঁরা। যৌতুকের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ স্বজনদের।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, নন্দিতা সরকার নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার পুঁটিমারি গ্রামের নিতাই সরকারের মেয়ে। মাত্র আটমাস আগে লোহাগড়া উপজেলার রামপুর এলাকার গোপাল রায়ের ছেলে মিঠুন রায়ের (২৫) সঙ্গে নন্দিতার বিয়ে হয়।
নন্দিতার ভাই মামলার বাদী উজ্জ্বল সরকার জানান, বিয়ের পর স্বামী মিঠুন ও পরিবারের সদস্যরা নন্দিতাকে যৌতুকের দাবিতে মারধর ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতন সইতে না পেরে নন্দিতা স্বামীর বাড়ি থেকে কয়েকবার বাবার বাড়ি চলে আসে। দুই পরিবারের সদস্যরা সমঝোতা করে নন্দিতাকে স্বামীর বাড়ি ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু নন্দিতার ওপর মানসিক নির্যাতন থামেনি। মাদকাসক্ত স্বামী মিঠুন ও কাকাশ্বশুর অরুণ রায় এবং তাঁর স্ত্রী মিনিসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নানা কুকথা শোনাতেন তাঁকে।
উজ্জ্বল অভিযোগ করেন, গত ১ আগস্ট রাত ১১টার দিকে স্বামীসহ তাঁর পরিবারের লোকেরা নন্দিতাকে কাপড় দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। ঘটনার পর নন্দিতার স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা তাঁকে লোহাগড়া হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়। গত ২ আগস্ট লোহাগড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
নন্দিতা সরকারের পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছে। প্রতিবেশীরা এলে তাঁরা মৃত অবস্থায় নন্দিতাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তার মৃত ঘোষণা করলে হাসপাতালে লাশ রেখে সবাই পালিয়ে যায়।
লোহাগড়া থানার ওসি আবু হেনা মিলন জানান, নন্দিতা সরকারের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়া গেলে বোঝা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। এ ঘটনায় পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।