বাগেরহাটের মোল্লাহাটে নিখোঁজের দুই বছর পর মাটি খুঁড়ে রানা শরীফ নামে এক যুবকের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। শ্বাসরোধে হত্যার পর ওই যুবকের মৃতদেহ মাটি চাপা দিয়ে রাখা ছিল বলে জানায় পুলিশ। হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন মোস্তফা চৌধুরী ছেলে মো. হোসাইন চৌধুরী (৩৯), এনামুল ফকিরের ছেলে রুহুল আমিন ফকির (২৭), হেদায়েত চৌধুরীর ছেলে শহিদুল চৌধুরী (৩০), ইউসুফ চৌধুরীর ছেলে মো. নাদিম চৌধুরী (৩২) এবং আবু মোল্লার ছেলে মো. জুয়েল মোল্লা (৩৪)। এঁদের প্রত্যেকের বাড়ি শাসন গ্রামে।
২০২০ সালের ২৮ আগস্ট সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে রানা শরীফকে ডেকে নেন তাঁর গ্রুপের সদস্যরা। এর পর থেকে আর রানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ছেলের সন্ধান না পেয়ে রানার বাবা আহম্মেদ শরীফ ওরফে বাচ্চু ওই বছরের ৪ অক্টোবর মোল্লাহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরির সূত্র ধরে শুরু হয় পুলিশের তদন্ত। প্রযুক্তির ব্যবহার আর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোরে মোল্লাহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্দেহজন পাঁচজনকে আটক করে। তাদের স্বীকারোক্তি ও বর্ণনা মোতাবেক বৃহস্পতিবার দুপুরে মোল্লাহাট উপজেলার শাসন গ্রাম থেকে মাটি খুঁড়ে ওই যুবকের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে উদ্ধার করা ওই কঙ্কাল দুই বছর আগে নিখোঁজ রানা শরীফের।
এ সময় নিহত রানার এক জোড়া স্যান্ডেল, তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং মাটি খোঁড়ার কাজে ব্যবহৃত একটি কোদাল উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের সঙ্গে রানা শরীফের একসময় সখ্য ছিল। এরা সবাই মাদক সেবনকারী এবং কেউ কেউ মাদক কারবারি।
রানার মা খুরশিদা বেগম বলেন, ‘অপেক্ষায় ছিলাম ছেলে জীবিত অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসবে। কিন্তু পুলিশ মাটি খুঁড়ে ছেলের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে। ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোমেন দাশ বলেন, আর্থিক লেনদেন নিয়ে একই গ্রামের জুয়েলের সঙ্গে রানার বিরোধ হয়। ওই বিরোধের জেরে তারা রানাকে ডেকে নিয়ে প্রথমে ইয়াবা সেবন করিয়ে নেশাগ্রস্ত করে। এর পর পাঁচজন মিলে হাত-পা চেপে ধরে এবং শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করে। এরপর মৃতদেহ বস্তায় ভরে মাটি চাপা দিয়ে রাখে।