ময়মনসিংহের সুতিয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুর নিচ থেকে উদ্ধার হওয়া লাশের পরিচয় মিলেছে। ওই খণ্ডিত মরদেহ ওমর ফারুক সৌরভ (২৪) নামে এক যুবকের। তিনি ঢাকার গুলশানের বেসরকারি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
ওমর ফারুক ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামের ইউসুফ আলী আকন্দের ছেলে।
পুলিশ বলছে, পারিবারিক বিরোধের জেরে সৌরভকে হত্যা করা হয়েছে।
এ আগে আজ রোববার সকালে সদর উপজেলার ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মনতলা ব্রিজের নিচে স্থানীয়রা একটি মরদেহের মাথা পলিথিনে মোড়ানো দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে খাদ থেকে একটি লাগেজ মুণ্ডু ছাড়া মরদেহ এবং খানিকটা দূরে পলিথিনে মোড়ানো মাথা উদ্ধার করে। লাশের পাশ থেকে একটি বালিশও উদ্ধার করা হয়।
আজ রোববার রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় এসে সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘বাবা-মা মারা যাওয়ার পর ছোট ভাইকে সন্তানের মত লালন পালন করেছি। আজকে ছোট ভাই আমার সন্তানকে মেরেছে, আল্লাহ যেন তার বিচার করে। সৌরভ এবং ইভার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল চার থেকে পাঁচ বছর ধরে। বিষয়টি আমরাও মেনে নেইনি। গত মাসের ১২ তারিখ সৌরভ এবং ইবা বিয়ে করে। ইবার বাবা তাকে গত ১৬ মে কানাডায় পাঠিয়ে দেয়। আর গতকাল ছেলে সৌরভকে ডেকে ময়মনসিংহে এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে তারা। আমি আমার একমাত্র ছেলে হত্যার বিচার চাই।’ এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন সৌরভের মা ও বোন।
তিনি আরও বলেন, ‘সৌরভ আমার ভাতিজি ইভাকে বিয়ে করে। সে বিয়ে মেনে নেয়নি ইভার বাবা ইলিয়াস আলী। পরে ইভাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এসব নিয়ে আমাদের পারিবারিক কিছুটা বিভেদ চলছিল। তবে সেই বিভেদ সৌরভকে খুন করার মতো না। সেখানে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সৌরভ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হোক এবং দোষীরা শাস্তি পাক।’
সেতুর নিচে লাগেজে মুণ্ডুবিহীন মরদেহ, অদূরে পলিথিনে মোড়ানো মাথাসেতুর নিচে লাগেজে মুণ্ডুবিহীন মরদেহ, অদূরে পলিথিনে মোড়ানো মাথা
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধে সৌরভকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। নিহতের স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দুপুরে চার খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।’